বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অংশগ্রহণমূলক-স্বচ্ছ ভোটের প্রত্যাশা পশ্চিমাদের

  •    
  • ৩ জুলাই, ২০২২ ১৮:৩৬

উনারা সাধারণত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর জোর দিয়ে থাকেন। সেজন্যই উনারা ইলেকশনটা যদি ইনক্লুসিভ, একসেপ্টবল, ফ্রি এবং ফেয়ার হয়, তাহলে উনারাও খুশি হবেন, পুরো দেশবাসী খুশি হবেন এই আশাবাদ উনারা ব্যক্ত করেছেন: পশ্চিমা কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর সিইসি

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা নির্বাচন কমিশনের কাছে আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে।

বিষয়টি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, কূটনীতিকরা বলেছেন, অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ-গ্রহণযোগ্য ভোট হলে অন্যদের পাশাপাশি তারাও খুশি করেন।আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে দেড় বছরের মতো সময় বাকি। তবে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে কি না, এ নিয়ে শঙ্কা এখনও দূর হয়নি।

২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি ও তার জোটের শরিকরা ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিলেও আগামী নির্বাচন আবার বর্জনের ঘোষণা এসেছে। তাদের দাবি, দলীয় সরকারের অধীনের নির্বাচন সুষ্ঠু করা সম্ভব নয়। বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়েও আপত্তি আছেন তাদের।

নির্বাচন কমিশন অবশ্য সুষ্ঠু ভোটের নিশ্চয়তা দিচ্ছে। সিইসি বলছেন, তারা কোনো দলের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য এই পদে আসেননি। তারা কারও ক্রীড়নক হবেন না। গত ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করাপোরশনসহ শতাধিক ইউনিয়ন, পৌরসভা ও একটি উপজেলায় ভোটের পরীক্ষায় নেমে কমিশনের তেমন কোনো সমালোচনার মুখে অবশ্য পড়তে হয়নি। গত কয়েক বছর ধরে ভোটে সহিংসতার যে চিত্র দেখা গিয়েছিল, সেটি দেখা যায়নি এবার।

এই বাস্তবতায় রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো- অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলোপমেন্ট বা ওইএসডির সদস্য কয়েকটি প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিকরা যান নির্বাচন কমিশনে।

ওইএসডি মূলত আন্তঃসরকারি সংস্থা। বিশ্বের ৩৮ টি দেশ এই সংস্থার সদস্য হলেও সভায় ১৫ টি দেশের প্রতিনিধির আসার কথা ছিল। তবে অস্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনার জেরেমি ব্রুর আসেননি।প্রায় দেড়ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে সিইসি ছাড়াও কমিশনার আহসান হাবিব, মো. আলমগীর ও রাশেদা সুলতানা ছিলেন। আরেক কমিশনার আনিছুর রহমান অসুস্থ থাকায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না।বৈঠক শেষে সিইসি বলেন, ‘ওনারা এসেছেন এটা একটা ট্রেডিশন। আগেও এসেছেন তারই ধাবাবাহিকতা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আইন-কানুন, আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন, আমরা আমাদের কার্যক্রমগুলো জানিয়েছি।‘উনারা সাধারণত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর জোর দিয়ে থাকেন। সেজন্যই উনারা ইলেকশনটা যদি ইনক্লুসিভ, একসেপ্টবল, ফ্রি এবং ফেয়ার হয়, তাহলে উনারাও খুশি হবেন, পুরো দেশবাসী খুশি হবেন এই আশাবাদ উনারা ব্যক্ত করেছেন।'আপনারা কী বলেছেন- জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘ইলেকশন কমিশন হিসেবে আমাদের যা যা করণীয় আমরা করব। উনারা প্লিজড। বলেছি ভবিষ্যতেও যখন প্রয়োজন হয়, আসবেন।’রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দুরত্বের বিষয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘এ বিষয়ে উনারা তেমন কিছু বলেনি। উনারাও খুব ভালো করেই জানেন, এখনও কিছু কিছু দল ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না। উনারাও বিশ্বাস করেন, আমরাও চেষ্টা করে যাব, যেন ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়।'নির্বাচন কমিশন কূটনীতিকদের কাছে কোনো সহায়তা চেয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা চট করেই সহযোগিতা চাই। ওরা যেটা বলেছে সহযোগিতা করার কথা। আমরা চট করেই নিজেরা কিছু বলিনি।

‘আমরা বলেছি আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দেখব। কোনো ট্যাকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে আমরা উনাদের জানাব।’

২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু এ বছর থেকেই সংসদ নির্বাচন নিয়ে তৎপরতা চোখে পড়ছে আন্তর্জাতিক মহলে৷

বিদেশিরা কী ধরনের সযোগিতা করবে- এই প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘আমরা বলেছি সেটা আমরা বিবেচনা করে দেখব। আমরা এখনো সহযোগিতা চাইনি।’নির্বাচন কমিশনে সক্ষমতা বাড়ানোর সহযোগিতা নাকি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহযোগিতা করবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ' এটা ইলেকশন রিলেটেড। যেটা হতে পারে ভোটার এডুকেশন, ইসির সক্ষমতা বৃদ্ধি বিষয় হতে পারে।'‘আমি তো বলেছি আমরা উনাদের জানাইনি এখনও। আমরা যদি মনে করি, কোনো রকম সহযোগিতা বা ট্যাকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স বা ট্রেনিং প্রয়োজন হবে, তখন উনাদের জানাব। এজন্য নিশ্চিত করে বলতে পারছি না কী ধরনের সহযোগিতা উনারা দেবে বা আমরা কী ধরনের সহযোগিতা চাইব।’

বৈঠকে কূটনীতিকরা নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে কথা বলেছেন বলেও জানান সিইসি। বলেন, ‘আমরা বলেছি, আমাদের এদিক থেকে কোনো বাধা নেই। তবে এ বিষয়ে ডিপ্লোমেটিকলি আলোচনা করে দেখতে পারেন। ফরেন ওবজারভারদের বিষয়ে আপনারা ফরেন মিনিস্ট্রিতে একটু কথা বলে দেখতে পারেন।’

কূটনীতিকদের পক্ষে ঢাকায় সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড বলেন, অংশগ্রহণমূলক ভোট নিশ্চিত করতে তারা সব ধরনের সহযোগিতা দেবেন।

তিনি বলেন, ‘নাগরিকদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে, গণতন্ত্রকে আরও কার্যকর ও শক্তিশালী করতে, অংশগ্রহণমূলক ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিতে সহায়ক অবস্থা তৈরি করতে এবং সকল অংশীজনের যথাযথ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমাদের দেশগুলো নির্বাচন কমিশনকে যেকোনো প্রকার সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।’

তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারাকে আরও শানিত করার মধ্য দিয়ে নাগরিকদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে সহায়তা করতে চায় ওইসিডি সদস্য দেশগুলো।’

বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস, ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি ইস্ট্রুপ পিটারসেন, ফ্রান্সের সহকারী রাষ্ট্রদূত গুইলাম অড্রেন ডি কেরড্রেল, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আছিম ট্রস্টার, ইতালির রাষ্ট্রদূত এনরিকোনুনজিয়াটা, নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত এনি গিয়ার্ড ভ্যান লিউয়েন, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত, স্পেনের রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সিসকো ডি আসিস বেনিটেজ সালাস, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তোরান ও জাপানের হেড অব মিশন ইয়ামায়া হিরোয়ুকি অংশ নেন।

এ বিভাগের আরো খবর