নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ৭২ বছর বয়সী এক ব্যক্তির পায়ুপথে টর্চলাইট ঢুকিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার রাত ১টার দিকে উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের থানারহাট বাজারে মহিলা মাদ্রাসার সামনের রাস্তায় ওই ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার শেখ নাছির উদ্দিন মাইজভান্ডারি উপজেলার ধানের শীষ গ্রামের মৃত শেখ ফরিদ উদ্দিনের ছেলে।
রোববার বেলা ২টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক শেখ নাসিরের পায়ুপথ থেকে টর্চলাইটটি বের করেন। বর্তমানে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন নাছির।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম জানান, জেনারেল সার্জন ডা. ফজলুর রহমান মানিকের নেতৃত্বে তিন চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করে বৃদ্ধের পায়ুপথ থেকে টর্চলাইটটি বের করেন।
ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, চরওয়াপদা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার ইন্ধনে সন্ত্রাসীরা নাছিরকে নির্যাতন করে।
বৃদ্ধ শেখ নাছির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে থানার হাট থেকে বাড়ি ফেরার পথে ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আবুল হোসেন সানাজের নেতৃত্বে খোকন, দিদার, সালাউদ্দিন, বোরহানউদ্দিন, ফখরুলসহ ১২-১২ জন আমাকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে তারা আমার পায়ুপথ দিয়ে টর্চলাইট ঢুকিয়ে দেয়। এতে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরে তারা আমাকে ঝোপের মধ্যে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।'
ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান ভূঁইয়াকে এ ঘটনায় দায়ী করে তিনি বলেন, ‘নুরবানু নামে এক বৃদ্ধার দান করা জায়গায় চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মঞ্জুরুল আলমের অর্থায়নে একটি মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু করি গত মাসে। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার তানভির উদ্দিন, চরওয়াপদা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দুলাল উদ্দিন কিরণ মসজিদ নির্মাণের কাজ তাদের দিতে বলে। আমি রাজি না হওয়ায় একাধিকবার তারা আমার ওপর হামলা চালায়। চেয়ারম্যান স্থানীয় লোকজনকে ভুল বুঝিয়ে কিছুদিন কাজ বন্ধও রাখে। এ নিয়ে আমি বাদী হয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। আদালতেও মামলা করি। তারই জের ধরে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’
ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান ভূঁইয়া দাবি করেছেন, এ ঘটনার সঙ্গে তিনি কোনোভাবেই জড়িত নন। ঘটনাটি তিনি লোক মাধ্যমে শুনেছেন।
তিনি বলেন, ‘তার সঙ্গে তো আমার বিরোধ নাই। তারা মসজিদ করছে, মসজিদের জায়গা-জমির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। এলাকার লোকজন রাস্তা নষ্ট হয় এ জন্য বাধা দিয়েছে। আমার এতে কী করার আছে?’
এ বিষয়ে চরজব্বার থানার ওসি দেবপ্রিয় দাশ জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।