কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ত্রিপুরার চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। বিভিন্ন জায়গায় ভোট দেয়া নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ এনেছে তৃণমূল কংগ্রেসসহ বিরোধীরা।
তারা নির্বাচন কমিশনে এ পর্যন্ত ১৬টি অভিযোগ দিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের ভাষ্য, ভোটে বিজেপির সন্ত্রাসে পুলিশ নীরব রয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভারতের সময় সকাল ৭টায় ভোটগ্রহণ শুরু হল। চার কেন্দ্রের বিভিন্ন বুথে ভোটারদের যেতে বাধা দেয়া, বুথ জ্যাম করা, অন্য দলের কর্মীদের মারধরসহ নানা অভিযোগ লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে বিরোধী দলগুলো।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২৫ কোম্পানি প্যারামিলিটারি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ২২১টি পোলিং বুথের মধ্যে চারটি গুরুতর এবং ৫৯টি স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ত্রিপুরার তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সুবল ভৌমিক বলেন, ‘এখানে যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই, তা আগেই আমরা বলেছিলাম। আবারও তা প্রমাণ হলো। এখানে শাসক দল ভয় পেয়েছে। তারা জানে, অবাধ-শান্তিপূর্ণ ভোট হলে তারা জিততে পারবে না। তাই ভোটের আগে থেকেই এখানে সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। বিজেপির এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে পুলিশ নীরব দর্শক।’
বুধবার রাতে ত্রিপুরার সুরমা বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অর্জুন নমশূদ্রের ওপর লাঠি, রড, বাঁশ দিয়ে বিজেপির দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালায় বলে তৃণমূলের অভিযোগ। শুধু তা-ই নয়, ভোটের দিন সমর্থকদের নিয়ে জমায়েত করলে প্রাণে মারার হুমকি দেয়া হয় বলে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে।
উপনির্বাচনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার মুখ্যমন্ত্রিত্ব বাঁচানোর লড়াই। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব হঠাৎ পদত্যাগ করায় মানিক সাহাকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী করে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
নির্বাচিত না হয়েও কোনো সাংবিধানিক পদে বসলে ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী তাকে ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচিত হয়ে আসতে হয়। অন্যথায় নির্ধারিত সময়ের পর তিনি আর মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকতে পারবেন না।
ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য ত্রিপুরায় বিপ্লব দেবের নেতৃত্বে বিজেপি সরকার উন্নয়নমূলক কোনো কাজ করেনি বলে বিরোধীদের অভিযোগ রয়েছে। ত্রিপুরায় বিপ্লবের নেতৃত্বও প্রশ্নের মুখে। সেখানে বিজেপিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বাড়ছিল। বিজেপি ছেড়ে অনেকেই অন্য দলে যোগ দিচ্ছিলেন। এ অবস্থায় বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব বিপ্লব দেবকে সরিয়ে মানিক সাহাকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী পদে বসায়।