প্রেস কাউন্সিলের ক্ষমতা বাড়াতে ১০ লাখ টাকার অর্থদণ্ডের যে প্রস্তাব করা হয়েছিল, তাতে সায় দেয়নি মন্ত্রিসভা। তবে অর্থদণ্ডের বিধান রেখেই দ্য প্রেস কাউন্সিল (এমেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট ২০২২ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। অবশ্য অর্থদণ্ড কত তা এখনও পরিষ্কার করেনি মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে আইনটির প্রাথমিক অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরে সচিবালয়ে সংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিসভা সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। আইনটি মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। তাদের প্রস্তাবে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা, নৈতিকতা ইত্যাদি ক্ষুণ্ন বা ভঙ্গের অপরাধে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের প্রস্তাব করা হলে তাতে সায় দেয়নি মন্ত্রিসভা।
আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই বাছাইয়ের পর আইনটিকে আবারও মন্ত্রিসভায় তোলা হবে বলে জানান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এটা ১৯৭৪ সালে একটা প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্ট ছিল, সেটার সংশোধনী নিয়ে আসা হয়েছিল আজ। আগে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য সংখ্যা ১৪ ছিল, সেটা ১৭ করা হয়েছে।
‘তথ্য অধিদপ্তর থেকে প্রেসকাউন্সিলের একজন প্রতিনিধি, মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় থেকে একজন এবং সামাজিক সংগঠনের একজন নারী সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করে বাড়ানো হয়েছে। কাউন্সিলের সেক্রেটারিকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা করা হয়েছে।’
মন্ত্রিসভা সচিব বলেন, ‘সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার মানোন্নয়ন ও সংরক্ষণ ও অপসাংবাদিকতা দূর করতে কাউন্সিল কর্তৃক রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা, নৈতিকতা ইত্যাদি ক্ষুণ্ন বা ভঙ্গের দায়ে অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ওনারা একটা প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু কেবিনেট এটাতে রাজি হয়নি। এখন তিরস্কারের দণ্ড আছে।
‘কাউন্সিল কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ সংশ্লিষ্ট পত্রিকায় প্রকাশের বিধান নতুন যুক্ত করা হয়েছে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে হানিকর বা প্রেস কাউন্সিলের আচরণ বিধিমালা পরিপন্থি সংবাদ, প্রতিবেদন, কার্টুন ইত্যাদি প্রকাশের দায়ে কোনো সংবাদপত্র বা সংবাদ সংস্থার বিরুদ্ধে স্বত: প্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নিতে পারবেন। সংবাদ সংস্থা বলতে প্রিন্ট মিডিয়া এবং সব ডিজিটাল মিডিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
যে অর্থদণ্ডের কথা আইনে উল্লেখ করা আছে সেটি সংশ্লিষ্ট সংস্থা বহন করবে বলেও জানান তিনি।
খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, ‘কার্টুন যদি প্রিন্ট বা ডিজিটাল মিডিয়াতে দেন, সেটা যদি অন্য ধরনের কিছু হয়, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিছু হলে, তাহলে তো এটা আপনার অপরাধ হবে। এখন আপনি ম্যাডামের বিরুদ্ধে অবনকসাস কিছু দিলেন কার্টুন, এখন সেটাকে অপরাধ হবে না?
‘অর্থদণ্ড আলোচনার ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত এটা ফাইনাল অনুমোদন দেয়া হয়নি। এটা আলাপ আলোচনার বিষয় আছে, তাই প্রাথমিক অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটা ভেটিং হয়ে আবার আসবে। ফাইনালি এটা আবার কেবিনেটে আসবে। যদিও ছোট একটি সংশোধন তারপরও এটাকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়নি। এটা আবার আসবে।’