বন্যার্তদের নামমাত্র সহায়তা দিয়ে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ভারতীয় নৃত্যশিল্পীকে তিন কোটি টাকা দেবে সরকার। এমন অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, ‘আপনি নাচনেওয়ালি নিয়ে এসে সেখানে নাচাবেন এটা দেশের মানুষ আর মেনে নেবে না।’
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো এবং বন্যাদুর্গত এলাকায় পর্যাপ্ত সহায়তা নিশ্চিতের দাবিতে সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র ফোরাম আয়োজিত প্রতীকী অনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘সিলেট সুনামগঞ্জে ৫০ লাখ লোক পানিবন্দি। তাদের জন্য এক থেকে দেড় টাকা, আর পদ্মা সেতুর বিচিত্র অনুষ্ঠানে ভারত থেকে এসেছেন নাকি একজন নৃত্যশিল্পী, তাকে নাকি দেবেন তিন কোটি টাকা। আর সিলেটে বন্যার্ত মানুষ, সুনামগঞ্জে বন্যার্ত মানুষ, নেত্রকোণার বন্যার্ত মানুষ, কুড়িগ্রামের বন্যার্ত মানুষ তাদের জন্য এক থেকে দেড় টাকা।’
বন্যার জন্য দায়ী প্রধানমন্ত্রী
এ সময় দেশের বন্যা পরিস্থিতির জন্যও প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘দেশের এই পরিস্থিতির জন্য কে দায়ী? এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী আপনি প্রধানমন্ত্রী। অন্য কেউ দায়ী নয়। জনগণকে ক্ষুধায় রেখে অনাহারে রেখে পানিতে ডুবিয়ে আপনি ঝাড়বাতির আলোয় পদ্মা সেতু দেখাবেন আর ভারত থেকে আপনি নাচনেওয়ালি নিয়ে এসে সেখানে নাচাবেন, এটা দেশের মানুষ আর মেনে নেবে না।’
রিজভী বলেন, ‘জনগণের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে তাকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর দিকে আপনি ঠেলে দেবেন, এটা আর এ দেশের মানুষ সহ্য করবে না। সময় এসেছে আপনার সরকারকে গলায় গামছা প্যাঁচিয়ে রাজপথে লুটিয়ে দেবে বাংলার মানুষ। সেই প্রত্যয় সেই অঙ্গীকার নিয়ে এখন মানুষ রাজপথে নেমে পড়বে।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেবেন তাহলে আজকে কেন রাত ৮টা থেকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য নির্দেশ দিচ্ছেন। কারণ কোথাও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নেই। ঢাকায় তো এখন এক থেকে দেড় ঘণ্টা রাত্রে, না হলে সকালে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে।
‘আপনি যে সকল আইন করেছেন শুধু আপনার লোকজনকে ধনী করার জন্য, আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার জন্য। আপনাদের লোকজন যাতে বাংলার মানুষের ভাগ্য হরণ করে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে এবং এই টাকা বিদেশে পাচার করতে পারে আপনি সেই সুযোগ করে দিচ্ছেন।’
রিজভী বলেন, ‘সিলেটের বন্যায় আমরা যা দেখছি সকালে হাঁটুপানি দুপুরের মধ্যে কোমর পানি। গোটা সুনামগঞ্জ শহর রীতিমতো পানিতে ভাসছে। আর আপনি ভাসছেন আনন্দে আত্মহারা হয়ে পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতু দেখিয়ে। পদ্মা সেতুর যে ভেলকিবাজি এটা জনগণ জানে, আপনি তামাশা করছেন। জনগণের সঙ্গে একটা মশকরা করছেন, ভেলকিবাজি দেখাচ্ছেন।’
সংগঠনের সভাপতি আ ন ম খলিলুর রহমান ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে এবং কৃষক দল নেতা আব্দুল্লাহ আল নাইমের সঞ্চালনায় প্রতীকী অনশনে বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা ও নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ বক্তব্য দেন।