শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নৌপথে শরীয়তপুরের জাজিরায় দুই ফেরির সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিসি)।
বিআইডব্লিউটিসির মেরিন বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. শাহজাহানকে প্রধান করে রোববার দুপুরে কমিটি করা হয়। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
মেরিন বিভাগের সহ-মহাব্যবস্থাপক আহামেদ আলী নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নৌপথে শরীয়তপুরের জাজিরায় পাইনপাড়া চ্যানেলের মুখে শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বেগম সুফিয়া কামাল ও বেগম রোকেয়া ফেরির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় গাড়িচাপায় একজন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন একজন।
সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া ফেরির র্যামের হাইড্রোলিক গিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফেরিতে থাকা অন্তত আটটি যানবাহনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সুফিয়া কামাল ফেরি ঘোরানোর সময় বেগম রোকেয়া ফেরির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। সে সময় সুফিয়া কামালে দাঁড়িয়ে থাকা পিকআপ ভ্যানের চালক খোকন শিকদার একটি গাড়ির চাপায় নিহত হন।
খোকনের বাড়ি ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া থানার চিংবাখালি গ্রামে। রোববার দুপুর ১২টার দিকে তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
স্বামীর মরদেহ নিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী তাহামিনা বলেন, ‘আমার স্বামী পিকআপ ভ্যানে মালামাল নিয়ে যাচ্ছিলেন। ভোররাতে তার নম্বর থেকে ফোন করে পুলিশ আমাদের মৃত্যুর খবর জানায়। আমার চার সন্তান নিয়ে এখন কোথায় যাব? সংসার চালানোর মতো কেউ নেই আমার।’
ফেরি দুর্ঘটনায় চালক নিখোঁজের খবর পেয়ে শরীয়তপুরের মাঝিরঘাটে ছুটে এসেছেন পিকআপ ভ্যানের মালিক মো. হাবিবুল্লাহ।
তিনি জানান, নিখোঁজ ওই চালকের নাম শামীম মোল্লা। তিনি বাসা বদলের মালামাল নিয়ে ফরিদপুর যাচ্ছিলেন।
বেগম রোকেয়া ফেরির আমির হোসেন নামের এক যাত্রীর অভিযোগ, ‘ফেরির চালক ঘুমাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনার সময় ফেরির সব লাইট বন্ধ ছিল। দুই ফেরি মুখোমুখি হওয়ার পর কেউই সাইরেন বাজায়নি। ফেরিটা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে নদীতে ভাসছিল।’