হৃদরোগে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা করাতে বিএনপি নেতারা যে দাবি জানিয়েছেন তাকে ‘রাজনৈতিক’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির নেতাদের খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি কিংবা অভিলাষ পূর্ণ করার অপচেষ্টা করছে। এবার খালেদা জিয়ার মাইল্ড স্ট্রোক হয়েছে। ইতোমধ্যে রিং পরানো হয়েছে। আমরা আশা করি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে তিনি বাড়ি যাবেন। বিদেশ নেয়ার যে দাবি, এটা হচ্ছে রাজনৈতিক দাবি।
রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নেত্রীকে ২০২০ সালের মার্চে যখন সাময়িক মুক্তি দেয়া হয়, তখনই শর্ত দেয়া হয় তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। তবে ২০২১ সালের এপ্রিলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এবং বছরের শেষে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার দাবি জানান তার দল এবং স্বজনরা। তবে সরকার তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
খালেদা জিয়া তৃতীয় দফায় যখন হাসপাতালে ভর্তি হন, তখন তার দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিনি জীবন-সংশয়ে আছেন। চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তার লিভার সিরোসিস হয়েছে এবং দেশে এর চিকিৎসা নেই। বিদেশে নিয়ে যেতে দেরি হলে কিছু হয়ে যেতে পারে।
তবে সরকার রাজি না হওয়ায় খালেদা জিয়া প্রায় তিন মাস পর বাসায় ফেরেন এবং শনিবার প্রথম প্রহরে আবার হাসপাতালে ভর্তি হন। এবার জানানো হয়েছে, তার মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক হয়েছে এবং তার এনজিওগ্রাম বা হার্টে রিং পরানো হয়েছে।
বিএনপি আবার তাদের নেত্রীকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার দাবি করছে। সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসা দিতে হবে। যেটা আমাদের এখানে নেই। যেটা বিদেশে আছে। বারবার চিকিৎসকরা বলছেন। আমাদের খুব সোজা কথা, আল্লাহ না করুন বেগম খালেদা জিয়ার যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে সরকারকেই দায় নিতে হবে। এ দেশের মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না। টেনেহিঁচড়ে নামাবে।’
ফখরুলের এই বক্তব্যকে রাজনৈনিত দুরভিসন্ধি হিসেবে দেখছেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি কিংবা অভিলাষ পূর্ণ করার যে অপচেষ্টা, বেগম জিয়াকে বলির পাঁঠা বানানো, সেটা সঠিক নয়।
‘বাংলাদেশের চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে সুস্থ করতে পারেন সেটা আগে প্রমাণ করেছেন তারা। খালেদা জিয়া আগে অসুস্থ ছিলেন, অনেক দিন হাসপাতালে ছিলেন। তখন বিএনপি সকাল-বিকাল-সন্ধ্যায় সমাবেশ করে বলত খালেদা জিয়াকে বিদেশ না নিলে বাঁচবেন না, তার জীবন সংকটাপন্ন। এগুলো যখন তারা সমস্বরে বলছিলেন, তখনই খালেদা জিয়া দুই দফায় সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন।’
বিএনপিসহ পদ্মা সেতুর সমালোচনাকারীদের সেতু উদ্বোধনের দিন দাওয়াত দেয়া হবে বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের সড়ক ও সেতুমন্ত্রী বলেছেন, সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। তারা এ বিষয় নিয়ে ভালো বলতে পারবেন। তিনি ইতোমধ্যে বলেছেন বিশ্বব্যাংকসহ সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।’