মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করায় সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
এর ফলে নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে মামলা চলতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার বিরুদ্ধে মামলা করার অভিযোগে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করে দুদক। এ মামলা বাতিল চেয়ে তিনি আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার আবেদনটি খারিজ করে দেয়।
সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। পাশাপাশি আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতকে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়।
এ সময় আদালত বলে, ‘এভাবে মামলা করলে সুপ্রিম কোর্ট থাকবে না। কোর্টকে রক্ষা করার দায়িত্ব সবার। সবাইকে এর ইমেজ রক্ষা করতে হবে।’
আদালতে আবেদনের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
মামলা থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলার অভিযোগে তিনি বলেছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে হওয়া একটি মামলা উচ্চ আদালতে ডিসমিস করার পরও প্ররোচিত হয়ে মামলাটির রায় পরিবর্তন করা হয়। মামলাটি ডিসমিস করতে দুই কোটি টাকা ও অন্য একটি ব্যাংক গ্যারান্টির আড়াই কোটি টাকার অর্ধেক এক কোটি ২৫ লাখ টাকা উৎকোচ চান এস কে সিনহা।
পরে মামলাটি তদন্তের জন্য আসে দুদকে। দীর্ঘ দেড় বছর তদন্ত করে সিনহার বিরুদ্ধে নাজমুল হুদার মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে দুদকে। আর মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগে উল্টো ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধেই ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি দুদকের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়-১-এ মামলাটি করেন সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।
অভিযোগে বলা হয়, ‘আসামি ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ রূপে নিশ্চিত না হয়ে বা মিথ্যা জেনেও বিজ্ঞ আদালত ও সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য এবং তার নিজের বিরুদ্ধে থাকা ২০০৮ সালের মামলাটি প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন মানসে মিথ্যা ঘটনার সৃষ্টি করে শাহবাগ থানায় ওই মামলা করেছেন মর্মে দুদকের তদন্তে উঠে আসে।
২০২১ সালের অক্টোবরে নাজমুল হুদাকে অভিযুক্ত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক পরিচালক বেনজীর আহম্মেদ চার্জশিট জমা দেন। একই বছর ২৪ নভেম্বর ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েস মামলার চার্জশিট গ্রহণ করে মামলাটি পরবর্তী বিচারের জন্য বিশেষ জজ আদালত-৯-এ বদলির আদেশ দেন।
গত ৬ এপ্রিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এ মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।