ফরিদপুর সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের শিশুপুত্র আল রাফসানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার ১৩ দিন পর হত্যা মামলা হয়েছে।
চেয়ারম্যান মিজান নিজেই মঙ্গলবার রাতে সদরপুর থানায় এই মামলা করেন। তাতে ৯ জনের নাম উল্ল্যেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আসামিরা হলেন, উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের মোস্তফা মৃধা, নাজমুল ইসলাম বাবু মোল্লা, এরশাদ মোল্লা, ইমরান মোল্লা, রাকিব মোল্লা, রুহুল আমিন মোল্লা, রবিউল মোল্লা ও সামেলা বেগম এবং নোয়াখালী জেলার চাটখালী থানার ফকিরহাটি গ্রামের মো. আলমগীর।
এর মধ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ৩ ঘণ্টা পরই মৃত্যু হয় আসামি এরশাদ মোল্লার। পুলিশের ধারণা তিনি টাওয়ার থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন।
মিজানুর রহমান সদর উপজেলার ঢেউখালী ইউপির চেয়ারম্যান হলেও পরিবার নিয়ে সাতরশি ইউনিয়নের সদরপুর পোস্ট অফিসের কাছে নতুন বাড়িতে বসবাস করেন। সেই বাড়িতেই গত ১৮ মে বিকেলে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তার ৯ বছরের ছেলে রাফসান ও স্ত্রী দিলজান বেগমকে।
দিলজাহান এখন ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে ওসি জানান, রাজনৈতিক ইস্যুতে চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বয়াতির সঙ্গে বিরোধ চলছিল একই এলাকার মোস্তফা মৃধার। এ বিরোধের জের ধরে বিভিন্ন সময় চেয়ারম্যানকে হত্যার হুমকি দেয়া হতো। সম্প্রতি পারিবারিক কলহের জেরে এরশাদ শেখ ও তার স্ত্রীকে নিয়ে সালিশ বৈঠক করেন চেয়ারম্যান। সেই সালিশে এরশাদ শেখকে জরিমানা করা হয়। এ নিয়ে চেয়ারম্যানের ওপর ক্ষিপ্ত হন এরশাদ শেখ।
চেয়ারম্যানের অভিযোগ, এরশাদ শেখের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে মোস্তফা মৃধাসহ আসামিরা গত ১৮ মে চেয়ারম্যানের সদরপুর উপজেলা সদরের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা তার শিশুপুত্র রাফসানকে কুপিয়ে হত্যা করে, কোপানো হয় তার স্ত্রীকেও।
ওসি সুব্রত জানান, মামলার পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
মামলার বিষয়ে চেয়ারম্যান মিজান বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে আসামিরা আমাকেসহ পরিবারকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল। আমি ঢাকায় অবস্থান করার কারণে প্রাণে বেঁচে যাই। আসামিরা নৃশংসভাবে আমার শিশুপুত্রকে খুন করে। আমার স্ত্রীকেও কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। সে এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।’
মামলা করতে দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘শিশুপুত্রকে দাফনের পর আমি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম।’