কার্যক্রম শুরু করা নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় এনে তাদের দলীয় প্রতীকে ভোটে অংশ নেয়ার যোগ্যতা দিতে চায় কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। সে লক্ষ্যে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নিবন্ধনের আহ্বান করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব হূমায়ুন কবীর খোন্দকার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ২৯ আগস্টের মধ্যে আবেদন করতে বলা হয়েছে। সব প্রক্রিয়া শেষ করে চলতি বছরের শেষ দিকে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করতে চায় নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্বে থাকা সংস্থাটি।
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালে এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনে।
সে সময় নিবন্ধনের জন্য তিনটি শর্ত দেয়া হয়। নিবন্ধিত দলগুলোকেই কেবল ভোটে অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। সে সময় ৩৯টি দল নিবন্ধন পায়।পরে কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ ও কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন আরও কয়েকটি দলের নিবন্ধন দিলে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৪টিতে।
অন্যদিকে শর্ত পূরণে ব্যর্থতা ও আদালতের নির্দেশে জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপার নিবন্ধন বাতিল হয়। এ কারণে এখনও নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৩৯টিই।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন দলের আবেদন পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে দেখা হবে। দলিলপত্র ও মাঠ পর্যায়ের তথ্যের সঠিকতা যাচাইয়ে বেশ কয়েক মাস লাগবে। সবকিছু শেষ করে এ বছর ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ নতুন দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত করা সম্ভব হতে পারে।
আবেদনে যেসব কাগজ জমা দিতে হবেনিবন্ধনে আগ্রহী দলগুলোকে আবেদনের সঙ্গে দলের গঠনতন্ত্র, নির্বাচনি ইশতেহার (যদি থাকে), দলের বিধিমালা যদি থাকে। লোগো এবং পতাকার ছবি জমা দিতে হবে।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি বা সমমানের কমিটির সব সদস্যের পদবিসহ নামের তালিকা, দলের নামে ব্যাংক হিসাব নম্বর ও ব্যাংকের নাম এবং সেই হিসাবের সর্বশেষ স্থিতি এবং দলের তহবিলের উৎসের বিবরণও উল্লেখ করতে হবে।
দলের নিবন্ধনে দরখাস্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অনুকূলে প্রদত্ত ক্ষমতাপত্রও জমা দিতে হবে।
পুরোনো দলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সংসদ নির্বাচনের যেকোনো একটিতে দলের প্রতীক নিয়ে কমপক্ষে একটি আসনে জয় অথবা কোনো নির্বাচনি এলাকায় প্রদত্ত ভোটের শতকরা পাঁচ শতাংশ সেই প্রতীকে পড়ার প্রমাণপত্রও জমা দিতে হবে।
এ ছাড়া একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় দপ্তর, দেশের এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় জেলা দপ্তর এবং অন্তত ১০০টি উপজেলা বা মেট্রোপলিটন থানায় দপ্তর এবং প্রতি উপজেলা বা থানায় ২০০ ভোটার সদস্য থাকার প্রমাণ দিতে হবে।
কোনো রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলে সেই দলের অনুকূলে কমিশন ফরম-৩-এ একটি নিবন্ধ সার্টিফিকেট দেবে। পরে রাজনৈতিক দলের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশ করবে।
নিবন্ধিত ফরম ও অন্যান্য তথ্যের জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিবের (নির্বাচন সহায়তা ও সরবরাহ) সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
শর্ত শিথিলের আহ্বানরাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরুল হক নুর জানিয়েছেন, তারা দল হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন করবেন।
নিবন্ধনের জন্য যেসব শর্ত আছে, তার অনেকগুলোই আছে জানিয়ে নিউজবাংলাকে নুর বলেন, ‘এক-তৃতীয়াংশ জেলা কমিটি, ১০০ উপজেলা কমিটি আমাদের রয়েছে। নির্বাচন কমিশন যদি সরকারের দ্বারা প্রভাবিত না হয় তাহলে আমাদের নিবন্ধন পেতে কোনো বাধা থাকবে না।’
তবে সব দল যেন নিবন্ধিত হতে পারে, সে জন্য শর্ত শিথিলের অনুরোধও করেছেন তিনি।