জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বিধি অনুসরণ না করে ভিক্ষুকসহ চিকিৎসাধীন চারজনকে গ্রেপ্তার করায় চারজন উপপরিদর্শককে (এসআই) বরখাস্ত ও দুজন কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ওই ছয়জনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়।
সরিষাবাড়ী থানার বরখাস্ত চার এসআই হলেন মুনতাজ আলী, সাইফুল ইসলাম, ওয়াজেদ আলী ও আলতাব হোসেন। প্রত্যাহার করা হয়েছে মোজাম্মেল হক ও সাথী আক্তারকে।
জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ভিক্ষুক আব্দুল জলিলের মেয়ে জুলেখা বেগম জানান, সরিষাবাড়ী পৌরসভার বাউসি বাজার এলাকায় ২০ শতক জমিতে বাড়ি বানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তার পরিবার থাকছে। সম্প্রতি মুজিবুর রহমান নামের একজন ওই জমি নিজের বলে দাবি করেন।
বিষয়টি একপর্যায়ে মামলায় গড়ায়। আদালত জলিলের পক্ষেই রায় দেয়।
মুজিবুর আদালতের আদেশ অমান্য করে সোমবার সকালে লোকজন নিয়ে জলিলের পরিবারের ওপর হামলা চালায়। এতে জলিল, তার স্ত্রী ও তিন ছেলে আহত হন। তাদের মধ্যে চারজনকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
হামলার পর মুজিবুরই চিকিৎসাধীন চারজনসহ ১৫ জনের নামে সরিষাবাড়ী থানায় মামলা করেন। এই মামলায় মঙ্গলবার সকালে হাসপাতাল থেকে চারজনকে টেনেহিঁচড়ে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে এসপি নাছির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরিষাবাড়ী হাসপাতাল থেকে যেভাবে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এভাবে গ্রেপ্তার করা যায় না। এটা প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে না। এ ঘটনায় চার এসআইকে বরখাস্ত ও দুই কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
‘সেই সঙ্গে সদর সার্কেলের এএসপি জাকির হোসেন সুমনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্তে যদি ওসির বিরুদ্ধে অনিয়ম পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
জুলেখা বেগমের অভিযোগ, ‘সোমবার হামলার পর রাতে তারা মামলা করতে গিয়েছিলেন। পুলিশ তাদের মামলা নেয়নি।’
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রকিবুল হক এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তিনি বলেন, ‘জলিলের ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা জুলহাস উদ্দিন মঙ্গলবার রাতে নয়জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। এই মামলার প্রধান আসামি মুজিবুর রহমানসহ দুজনকে বুধবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
‘এর আগে জলিলের পরিবারের কেউ মামলা করতে আসেনি। তারা মিথ্যা কথা বলছে।’