কুমিল্লার দেবিদ্বারে স্বামীর দেয়া আগুনে দগ্ধ সাদিয়া বেগম মারা গেছেন।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আগুন দেয়ার ৭ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে মারা যান তিনি।
নিহত সাদিয়ার চাচা আলমগীর হোসেন আলম নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৩০ বছর বয়সী সাদিয়া উপজেলার গুনাইঘর ইউনিয়নের গুনাইঘর গ্রামের আসাদ সরকারের স্ত্রী ও একই উপজেলার পদ্মকোট গ্রামের ফরিদুল আলম অপু সরকারের মেয়ে।
গত শনিবার সকাল ৮টার দিকে সাদিয়ার স্বামী আসাদ সরকার ঝগড়ার একপর্যায়ে সাদিয়ার শরীরে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে সাদিয়ার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে দ্রুত স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেন। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় আসাদকে আসামি করে রোববার দেবিদ্বার থানায় মামলা করেন সাদিয়ার বাবা ফরিদুল আলম অপু। বুধবার রাতে আসাদ সরকারকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাকালীন অগ্নিদগ্ধ সাদিয়া এক ভিডিও বার্তায় বলেন, গত পাঁচ মাস ধরে যৌতুকের টাকার জন্য তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন আসাদ। টাকা না দেয়ায় তার শরীরে কেরোসিন দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন আসাদ। এর আগেও একাধিকবার তাকে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে মারার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।
সাদিয়ার মা শামসুন নাহার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে সাদিয়াকে যৌতুকের জন্য চাপ দিত তার স্বামী। বিভিন্ন সময় শারীরিক নির্যাতন করত। মেয়ে আমার কাছে প্রায় সময় কান্না করে জানাত।’
দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকালে সাদিয়া মারা গেছে। তার আগে সাদিয়ার বাবা এ বিষয়ে একটি মামলা করেছেন। সেই মামলায় সাদিয়ার স্বামীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আমরা ঘটনার তদন্ত করছি।’
এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।