সরকার স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছে বলেই কলাবাগানের পার্ক রক্ষার প্রতিবাদ করায় মা ও তার কিশোর ছেলেকে কারাগারে আটকে রাখার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দেশে গণতন্ত্র, সুশাসন এমন কি মানবাধিকার নিশ্চিত করতে পারলে এমন ঘঠনা ঘটতো না বলে মনে করেন তিনি।
মঙ্গলবার সকালে ঠাকুরগাঁওয়ের কালিবাড়িতে নিজের বাড়িতে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মত বিনিময়ে এসব কথা বলেন।
কলাবাগানে তেঁতুলতলা খেলার মাঠে সম্প্রতি থানার ভবন নির্মাণ শুরু করে পুলিশ। শিশুদের খেলার মাঠটিতে থানা ভবন নির্মাণে বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে এলাকার লোকজন। ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ করায় মা ও ছেলেকে আটক করে পুলিশ। আটকের প্রতিবাদ করার পর সেদিনই তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
ওই মাঠে ভবন নির্মাণ করা হবে কি না সে সিদ্ধান্ত নিতে এরইমধ্যে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
বিষয়টি নিয়ে ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি কলাবাগানের পার্ক রক্ষা করতে গিয়ে প্রতিবাদ করায় মা ও তার কিশোর ছেলেকে কারাগারে আটকে রাখায় ইতিমধ্যে প্রমাণ হয়েছে যে, এই সরকার কতটা স্বৈরতান্ত্রিক।’
দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিএনপি কোনো দেশের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে আনেনি, বরং তারা নিজ থেকেই বিএনপির কাছে এসেছে বলে দাবি করেছেন দলটির মাহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘নতুন করে রাষ্ট্রদূতদের ডেকে এসব বিষয়ে কথা বলার ব্যাপারে কিছু নেই। এমনকি আমরা কখনো কোনো রাষ্ট্রদূতকে ডাকি না। বরং তারা নিয়মিতভাবে আগে থেকে এসব রিপোর্ট রাখেন, নিজেরা আমাদের অফিসে আসেন এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিভিন্ন পত্র পত্রিকা, রিসার্চ সেন্টার এবং বিভিন্ন দেশ আওয়ামী লীগ সরকারকে স্বৈরাচার হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তার প্রমাণ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে মানবাধিকার রিপোর্ট, বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে যে রিপোর্ট এসেছে তাতে নতুন করে প্রমাণ করার কিছু নেই যে আওয়ামী লীগ স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছে। এখানে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করার কিছু নেই। দেশের মানুষ নিজেরাই টের পাচ্ছে যে তারা এক ফ্যাসিবাদী শাসনের মধ্যে আছে।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে আওয়ামী লীগের অনির্বাচিত সরকার পুরোপুরি আমলা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। জনগণ থেকে তারা সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, ফলে যখন আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের কথা বলে তখন এটা আমাদের কাছে হাস্যকর মনে হয়। জনগণ সেটা হাস্যকর মনে করে।’
সরকারের প্রশ্রয়ে মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘণ হচ্ছে বলেও এ সময় অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের যেকোনো প্রতিষ্ঠানের উপর স্যাংশন আসা অত্যন্ত লজ্জার কথা। স্যাংশন এত তাড়াতাড়ি উঠবে না যদি না তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করা বন্ধ না করে। আমরা বারবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি যে, তোমরা আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করছ।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একাত্তরের চেতনার কথা বলতে বলতে তাদের মুখে ফেনা উঠে যায়, সে চেতনা তারা সম্পূর্ণভাবে ভুলুন্ঠিত করেছে। একদলীয় শাসন ও এক ব্যক্তির শাসন এখানে প্রতিষ্ঠা করেছে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না বলেও জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আলাপকালে জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান ও বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।