বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঈদযাত্রা হবে নারকীয়, শঙ্কায় যাত্রী কল্যাণ সমিতি

  •    
  • ১৭ এপ্রিল, ২০২২ ১৩:৫৭

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘করোনা নিয়ন্ত্রণে থাকায় এবারের ঈদে প্রায় দ্বিগুণ মানুষ গ্রামের বাড়ি যাবে। ঢাকা থেকে এক কোটির বেশি মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করবে।’

করোনা পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে আসায় এবার ঈদে ঘরমুখী মানুষের ঢল বেশি থাকবে বলে মনে করছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। তাদের আশঙ্কা, মহাসড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামাল দেয়া সম্ভব হবে না কোনোভাবেই। এ কারণে তাই ঈদযাত্রা হবে নারকীয়।

রোববার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন আশঙ্কার কথা জানান সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল চৌধুরী। ঈদযাত্রায় অসহনীয় যানজট, পথে পথে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘করোনা নিয়ন্ত্রণে থাকায় এবারের ঈদে প্রায় দ্বিগুণ মানুষ গ্রামের বাড়ি যাবে। ঢাকা থেকে এক কোটির বেশি মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করবে। এ ছাড়া এক জেলা থেকে অন্য জেলায় আরও প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ যাতায়াত করতে পারে। এতে ২০ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদবাজার, গ্রামের বাড়ি যাতায়াতসহ নানা কারণে দেশের বিভিন্ন শ্রেণির পরিবহনে বাড়তি প্রায় ৬০ কোটি ট্রিপ যাত্রীর যাতায়াত হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজন বাড়তি নিরাপত্তা, সর্বোচ্চ সতর্কতা, সব পথের প্রতিটি যানবাহনের সর্বোচ্চ ব্যবহার সুনিশ্চিত করা। কিন্তু যানজট ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে পরিবহনের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা না গেলে এবারের ঈদযাত্রায় নারকীয় পরিস্থিতি হতে পারে।’

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, ‘এবারের ঈদযাত্রায় রাজধানীবাসী যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে। তাই এই মুহূর্ত থেকে রাজধানীর সব ফুটপাত, রাস্তার হকার ও অবৈধ পার্কিং মুক্ত করতে হবে। আগামী ২৫ রমজান থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত দুপুরের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাজধানী অচল হয়ে যেতে পারে যানজটে।’

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘গত দুই বছর মানুষ ঈদে বাড়িতে যেতে পারেনি। তারপরও গত দুই বছরে ৬০ লাখ মানুষ ঈদে বাড়িতে গিয়েছে। একটি গবেষণায় দেখেছি, ঈদের আগে চার দিন গড়ে ৩০ লাখ করে মানুষ ঢাকা ছাড়বে।

‘নৌ, সড়ক ও রেল মিলে আমাদের সক্ষমতা আছে ১৪ লাখ। বাকি ১৬ লাখ, তারাও বাড়ি যাবে। তারা মূলত ছোট যানবাহন, মোটরসাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়িতে, ট্রাকে, কাভার্ড ভ্যানে, ট্রেনের ছাদে, লঞ্চের ছাদে বাড়ি যাবে। আর তখনই দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হয়ে যাবে।’

হাদিউজ্জামান বলেন, ‘ঈদের আগে ও পরে ৪-৪ দিন ছুটি আছে। এখানে একটা ব্যবস্থাপনা নিতে হবে। যেহেতু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ২০ রমজানের পরে বন্ধ হয়ে যাবে, তাই ঈদের আগেই পরিবারের অন্য মানুষদের বাড়ি পাঠিয়ে দিন। অফিসের জন্য যারা ২৭ রমজানের আগে যেতে পারছে না, অন্যরা আগে পৌঁছালে সড়কে চাপ কিছুটা কমবে।’

তিনি বলেন, ‘এবারের ঈদযাত্রায় রাজধানীবাসী যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে। তাই এই মুহূর্ত থেকে রাজধানীর সব ফুটপাত, রাস্তার হকার ও অবৈধ পার্কিং মুক্ত করতে হবে। আগামী ২৫ রমজান থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত দুপুরের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাজধানী অচল হয়ে যেতে পারে যানজটে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বেশি ভাড়া আদায়ের লোভে প্রতি বছর সড়ক ও নৌপথে ফিটনেসবিহীন যানবাহনে যাত্রী বহন, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী বহন, নৌপথে পর্যাপ্ত বয়া-বাতি ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম না থাকা সত্ত্বেও যাত্রী বহন করা হয়।

এতে জানানো হয়, একজন চালককে বিশ্রামহীনভাবে ১০-১৫ ঘণ্টা বিরামহীনভাবে যানবাহন চালাতে বাধ্য করার কারণে এবং অদক্ষ চালক দিয়ে আনফিট যানবাহন চালানোর কারণে সড়ক ও নৌ দুর্ঘটনায় প্রতি বছর ঈদে কয়েক শ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে, ২০২১ সালে ঈদুল ফিতরে ৩১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৩ জন নিহত ও ৬২২ জন আহত হয়েছেন। এবারও অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ থাকায় সড়ক ও নৌ দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর