বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যেভাবে হয় সেই সাইকেল শোভাযাত্রা

  •    
  • ১৬ এপ্রিল, ২০২২ ২৩:৫২

প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থী। তার মধ্যে ১৮০ জন ছাত্রী; বাকিরা ছাত্র। ছেলে--মেয়ে সবারই সাইকেল আছে। এ জন্যই আমরা সাইকেল শোভাযাত্রা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’

ছিল না লোকজ হাতি-ঘোড়ার ডামি কিংবা রং-বেরঙের মুখোশ। পহেলা বৈশাখের দিনটিতে সাদামাটা এক সাইকেল শোভাযাত্রা করেই দেশজুড়ে সাড়া ফেলেছে নড়াইলের একটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা।

জেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নে গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আয়োজনে ব্যতিক্রমী ওই শোভাযাত্রা ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। নারী শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ওই সাইকেল শোভাযাত্রার একটি ভিডিও লাখ লাখ মানুষ দেখেছেন, শেয়ার করেছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, নতুন বছর আসার কয়েকদিন আগেই অভিনব ওই শোভাযাত্রার পরিকল্পনা করা হয়। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও সব শিক্ষক মিলে সিদ্ধান্ত নেন- শিক্ষার্থীরা সাইকেল চালিয়েই এবার মঙ্গল শোভাযাত্রা করবে।

প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থী। তার মধ্যে ১৮০ জন ছাত্রী, বাকিরা ছাত্র। ছেলে-মেয়ে সবারই সাইকেল আছে। এজন্যই আমরা সাইকেল শোভাযাত্রা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’

তিনি জানান, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী- নতুন বছরের প্রথম দিনটির ভোর বেলায় বৈশাখী সাজে বিদ্যালয় চত্বরে জড়ো হন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এদিন শিক্ষার্থীদের কেউ কৃষক, কেউ শ্রমিক, বাউলসহ নানা সাজে সেজেছিল।

সকাল ৮টার দিকে প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীরা সাইকেলের বহর নিয়ে বের হয়। সাড়ে তিন শ সাইকেলের প্রথমেই ছিল শাড়ি পরা ছাত্রীরা। এরপর স্কুলড্রেস পরা ছাত্রী এবং পেছনে ছাত্ররা।

ওই স্কুলে মূলত ১১টি গ্রাম থেকে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করতে আসেন। শোভাযাত্রাটি তাই গুয়াখোলা, হাতিয়াড়া, বাকলি, মালিয়াট, কমলাপুর, রঘুরামপুর, দোগাছিসহ ওই ১১টি গ্রাম প্রদক্ষিণ করে। এ সময় রাস্তার দুই পাশ থেকে স্থানীয় মানুষেরা হাত নেড়ে শিক্ষার্থীদের অভিবাদন জানান।

প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘এখানে কিছু শিক্ষার্থীকে তাদের পরিবারই সাইকেল কিনে দেয়। যারা দরিদ্র পরিবারের, তাদেরকে স্কুল থেকে সাইকেলের ব্যবস্থা করা হয়। কারণ অনেক শিক্ষার্থী ৬ থেকে ৭ কিলোমিটার দূর থেকে স্কুলে আসে।

‘স্কুলের ফান্ড খুব বেশি নেই। তবে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে গিয়ে আমরা সাইকেলের জন্য আবেদন করি। তাদের কাছ থেকে এনে গরিব শিক্ষার্থীদের মাঝে সাইকেল বিতরণ করি।’

প্রধান শিক্ষক জানান, শেখহাটি গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতি বছরই বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উদযাপন করে। তবে করোনার কারণে গত দুই বছর এই উদযাপন অনুষ্ঠিত হয়নি।

তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে আমাদের শোভাযাত্রার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। দেশবাসী আমাদের প্রশংসা করছে। বিশেষ করে, আমাদের মেয়েদের নিয়ে বেশি প্রশংসা করা হচ্ছে। একজন শিক্ষক হিসেবে যে এটা কতটা আনন্দের, আমি মুখের ভাষায় বুঝাতে পারবো না।’

এ বিভাগের আরো খবর