বিবস্ত্র অবস্থায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকে এক নারী জুতা দিয়ে পেটাচ্ছেন, এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
বিবস্ত্র সেই নেতা বরগুনা সদরের নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম জাকির। পরে তার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপজেলা আওয়ামী লীগের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে শাহ আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। সে সঙ্গে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটিও করে দেয়া হয় ঘটনার তদন্তে।
ইন্টারনেটে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে দলের সম্মানহানীর অভিযোগে শনিবার বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মুহাম্মদ ওলি উল্লাহ ওলি।
অবশ্য বৈঠকে বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অভিযুক্ত শাহ আলম জাকির ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন জানিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
সম্প্রতি ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে গত শুক্রবার নলটোনা ইউনিয়ন তৃণমূল আওয়ামী লীগ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম জাকির পরকীয়া প্রেমে নারীসহ বিবস্ত্র অবস্থায় ধরা পড়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এতে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্টসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এর আগেও শাহ আলম জাকির একাধিকবার পরকীয়া করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছে।
আওয়ামী লীগ উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রেখেছে। এমন অবস্থায় তার এমন কর্মকাণ্ড স্থানীয় মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। তাই তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে চিঠিতে দাবি জানায় আওয়ামী লীগ।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মুহাম্মদ ওলি উল্লাহ বলেন, শাহ আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আমরা বৈঠক করেঠি। বৈঠকে শাহ আলম নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তিনি ‘ষড়যন্ত্র করে নারী দিয়ে ফাঁদে ফাঁসানো হয়েছে’ বলে পাল্টা একটি অভিযোগ করেছেন। তবে কে বাব কারা ফাঁসিয়েছেন তা উল্লেখ করেননি।’
তিনি বলেন, ‘বৈঠকে তিন দিনের মধ্যে জবাব চেয়ে শাহ আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাচ্চুকে প্রধান ও যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুর রহমান মারুফকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
অভিযুক্ত শাহ আলম জাকির বলেন, ‘আমি আমার বক্তব্য লিখিতখভাবে উপজেলার নেতাদের কাছে দিয়েছি। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। ইউপি নির্বাচনের পর থেকে আমার বিরুদ্ধে একটা চক্র লেগে আছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ যে সিদ্ধান্ত নেবে আমি মেনে নেব।’
নলটোনা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর বিশ্বাস বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক শাহ আলমের বিষয়ে তৃণমূল আওয়ামী লীগ উপজেলা কাছে চিঠি দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হয়েছে। তদন্তে দোষ প্রমাণ হলে দল সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।’
বরগুনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে আসলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’