বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর দুই বছর পার করতে যাচ্ছেন ড. বেনজীর আহমেদ। দেশের ২৯ তম ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) হিসেবে বেনজীর আহমেদ দায়িত্ব নেন ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল।
বাংলাদেশ পুলিশকে গত দুই বছর ধরে নানামুখী সংস্কার ও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এক অনন্য উচ্চতা ও মর্যাদায় আসীন করেছেন তিনি। বাহিনীতে বেনজীর আহমেদ পরিচিতি পেয়েছেন ‘পরিবর্তনের অগ্রনায়ক’ হিসেবে।
আইজিপি হিসেবে বেনজীর আহমেদ দায়িত্ব নেয়ার দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে তার সহকর্মীরা বুধবার আয়োজন করে এক আলোচনা অনুষ্ঠানের। সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাহিনীর পক্ষ থেকে আইজিপিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত আইজিপি মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম, ডিআইজি মো. তওফিক মাহবুব চৌধুরী এবং বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পুলিশ ইন্সপেক্টর বি এম ফরমান আলী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই মানুষের জীবন। সময় এক বহতা নদী। সময় চলে যায়, জীবন থেমে থাকে না। সংগঠনও জীবনের ন্যায়। এজন্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে, সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত সংস্কার ও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি।’
কোনো অন্যায়ের সঙ্গে পুলিশ জড়িত না হোক এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন আইজিপি।
বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ে দীর্ঘ চাকরির অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আইজিপি বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশের নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন এ তিনটি জায়গায় কাজ করা খুব দরকার।
সবার সহযোগিতায় কনস্টেবল, সাব-ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট পদে নিয়োগ বিধিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বলেন, “কনস্টেবল পদে ‘বেস্ট অব দি বেস্ট’ প্রার্থী নিয়োগ করা হয়েছে, যার সুফল দেশের জনগণ খুব শিগগির পাবে।”
এএসপি পদে নিয়োগ বিধিতেও সংস্কার আনার সময় এসেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
করোনাকালে দেশ ও জনগণের সেবায় পুলিশের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘পুলিশ জনগণের যে ভালোবাসা ও আস্থা অর্জন করেছে তা অভূতপূর্ব। জনগণের এ আস্থা ও বিশ্বাস ধরে রাখার জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানাই।’
তিনি আগামীতে দেশের জনগণের শান্তি, নিরাপত্তা এবং সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
অনুষ্ঠানে আইজিপির কর্মকালীন খণ্ডচিত্রের ভিত্তিতে নির্মিত দুটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
আইজিপিকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাগরিকদের অভিমতের ভিত্তিতে ‘পরিবর্তনের পরিক্রমা: নাগরিক অভিমত’ এবং বিট পুলিশিংকে উপজীব্য করে রচিত ‘দুর্জয়ের ডায়েরি’র দ্বিতীয় খণ্ডের মোড়ক উম্মোচন করা হয়।