সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার নলতা কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশন। এখানে এক হাজার নয়, দুই হাজার নয়, একসঙ্গে ১০ হাজার মানুষের ইফতার আয়োজন। পুরো রমজান মাসব্যাপী চলে এ আয়োজন। নলতা আহছানিয়া মিশন কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, এটিই দেশের সর্ববৃহৎ ইফতার মাহফিল।
আহছানিয়া মিশন প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে নলতায় ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হচ্ছে।
১৯৩৫ সালে অভিভক্ত বাংলা ও আসামের শিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ্ নলতায় প্রতিষ্ঠা করেন আহছানিয়া মিশন। সে সময় থেকে স্বল্প পরিসরে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করতেন তিনি। ধীরে ধীরে বেড়েছে এর ব্যাপ্তি। এখন শুধু স্থানীয়রাই নন, দূর দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন ইফতার করতে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিদিন আড়াই লাখ টাকা খরচ হয় ইফতারে। পুরো টাকাই আসে দান থেকে। আয়োজনে থাকে নলতা আহছানিয়া কেন্দ্রীয় মিশন।
ইফতারের আয়োজনে গিয়ে দেখা যায়, খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ্ কবরের পাশেই বিশাল প্যান্ডেল। ইফতার তৈরিতে ব্যস্ত দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক। প্লেটে সাজানো হচ্ছে ডিম, কলা, খেজুর, ছোলাসহ নানা খাবার।
স্বেচ্ছাসেবক আইউব হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১০ হাজার প্লেটের প্রতি প্লেটে দেয়া হয় চিড়া, ফিরনি, ছোলা, ডিম, সিঙ্গারা, কলা ও খেজুর। ১২ মণ দুধ দিয়ে তৈরি হয় ফিরনি। রমজানের আগেই প্রস্তুত করা হয় বিশাল ছাউনি।
‘ইফতারের আইটেমগুলো প্যান্ডেলের পাশেই তৈরি বা রান্না হয়। আছরের নামাজের পরপরই ইফতারি দিয়ে প্লেট সাজানোর কাজ শুরু হয়।’
ইফতারের তত্ত্বাবধায়ক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘রওজা শরিফ প্রাঙ্গণে ৬ হাজার মানুষ ইফতার করেন। বাকি চার হাজার মানুষের ইফতার পাঠিয়ে দেয়া হয় বিভিন্ন মসজিদ ও প্রতিষ্ঠানে।’
ইফতার করতে যশোরের বাগআচড়ার থেকে এসেছেন হাফিজুর রহমান। নিউজাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে ইফতার করে ভালো লাগে।’
ইফতার আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত আবুল ফজল নিউজাবাংলাকে বলেন, ‘খান বাহাদুরের জীবদ্দশায় এখানে ইফতার চালু হয়। সেটা ১৯৩৫ সাল। সেই বছরই তিনি নলতায় প্রতিষ্ঠা করেন আহছানিয়া মিশন। তবে তখন সেটা ছিল স্বল্প পরিসরে। বর্তমানে এর কলেবরে বাড়তে বাড়তে ১০ হাজার পৌঁছেছে। প্রতিদিন ২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা খরচ হয়।’
নলতার ইফতার মাহফিল দেশের সবচেয়ে বৃহৎ বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশনের সহসভাপতি আলি আযম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি, বাংলাদেশে এত বৃহত্তর পরিসরে আর কোথাও ইফতার মাহফিল হয় না।’