বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভোজ্যতেল সিন্ডিকেট ধরতে মাঠে গোয়েন্দারা

  •    
  • ৪ এপ্রিল, ২০২২ ২২:০৯

প্রতিযোগিতা কমিশনের কর্মকর্তারা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায় দেশেও পণ্যটির দাম বাড়বে- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের কাছে মনে হয়েছে, বিশ্ববাজার অপেক্ষা দেশীয় বাজারে দাম অনেক বেশি বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে কেন বেশি দাম বাড়াল, এর পেছনে কোনো সিন্ডিকেট চক্র কাজ করছে কি না– এসব বিষয় অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে।

অসাধু একটি সিন্ডিকেট কারসাজি করে ভোজ্যতেলের বাজার অস্থিতিশীল করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে সিন্ডিকেটে জড়িত অসাধু ব্যবসায়ীদের ধরতে মাঠে নেমেছেন গোয়েন্দারা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিযোগিতা কমিশনের একটি বিশেষ গোয়েন্দা টিম গত সপ্তাহ থেকে এই অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতা ও অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণ, কোনো সিন্ডিকেট জড়িত কি না– এসব বিষয় তদন্ত করে দেখছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। শিগগিরই এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেবেন গোয়েন্দারা। পরবর্তী সময়ে ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও প্রতিযোগিতা কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

করোনা সংক্রমণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় অধিকাংশ পণ্যসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে। এর মধ্যে ভোজ্যতেলের (সয়াবিন, পাম অয়েল) দাম বেশি বেড়েছে।

এক বছর ধরেই ভোজ্যতেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও গত মার্চে এর দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বাজার নিয়ন্ত্রণে শেষ পর্যন্ত সরকার হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে ভোজ্যতেলের উৎপাদন, ভোক্তা ও সরবরাহ পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ছাড় দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। তার পরও বাজারে এর প্রভাব সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। রমজানে ভোক্তা আগের দামেই অর্থাৎ প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকা দরে কিনতে বাধ্য হচ্ছে।

প্রতিযোগিতা কমিশনের কর্মকর্তারা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায় দেশেও পণ্যটির দাম বাড়বে- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের কাছে মনে হয়েছে, বিশ্ববাজার অপেক্ষা দেশীয় বাজারে দাম অনেক বেশি বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে কেন বেশি দাম বাড়াল, এর পেছনে কোনো সিন্ডিকেট চক্র কাজ করছে কি না– এসব বিষয় অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে।

ভোজ্যতেল আমদানি ও বাজারজাতকারী স্থানীয় বড় বড় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন, সরবরাহ ও মজুতের তথ্য তলব করেছে প্রতিযোগিতা কমিশনের গোয়েন্দা টিম। একই সঙ্গে ওই সব প্রতিষ্ঠানের মিল সরেজমিন পরিদর্শনে যাবেন তারা। ইতোমধ্যে তারা তিনটি মিল পরিদর্শন করেছেন।

প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক বাণিজ্য সচিব মফিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মার্চ থেকে ভোজ্যতেলের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির বিষয়টি আমলে নেয়া হয়। এর পেছনে কোনো সিন্ডিকেট আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে আমরা অনুসন্ধানের পদক্ষেপ নিয়েছি।

‘এ লক্ষ্যে একটি বিশেষ টিম মাঠে কাজ করছে। ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতাবিরোধী কাজ করে বাজার প্রভাবিত করছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে এবং কোনো অনিয়ম বা কারসাজির প্রমাণ পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তদন্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনো মিল সক্ষমতার চেয়ে কম তেল পরিশোধন করে বাজারে সরবরাহে ইচ্ছাকৃত ঘাটতি ঘটাচ্ছে কি না বা কেউ মজুত করছে কি না– এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে উৎপাদন, সরবরাহ ও মজুতের তথ্য চাওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া আগের মাসের তথ্যের সঙ্গে বর্তমান মাসের তথ্য মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। এসব তথ্য বিচার-বিশ্লেষণ করলে কারসাজির ঘটনা সহজেই উদ্ঘাটন করা যাবে বলে মনে করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা প্রথমে অভিযুক্ত পক্ষের শুনানি নেব। যদি দেখা যায় যে শুনানিতেই বিষয়টির নিষ্পত্তি সম্ভব তা হলে সে পথেই সমাধান টানা হবে। অন্যথায় গভীর তদন্ত করা হবে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে শাস্তি পেতে হবে।’

কেমন শাস্তি হতে পারে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান গত তিন বছরে যে পরিমাণ টার্নওভার বা লেনদেন করেছে তার ওপর সর্বনিম্ন ১ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে। এতে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর