মাদারীপুর শহর আর সদর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে আড়িয়াল খাঁ নদ। শহরে যেতে হলে ওই ইউনিয়নবাসীদের নদী পাড়ি দিতে হয় ট্রলারে বা নৌকায় করে।
ওই ৬ ইউনিয়নে লাখখানেক মানুষের বসবাস। তাদের অনেকেরই কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শহরে।
নদী পাড়ি দিতে দীর্ঘদিন ধরে তারা নদের উপর একটি সেতুর দাবি করে আসছেন। প্রায়ই তারা এই দাবি নিয়ে মানববন্ধন করেন। সবশেষ বৃহস্পতিবার তাদের এই কর্মসূচি হয়।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিনের এই দাবি পূরণের কোনো পদক্ষেপই নেয়া হচ্ছে না।
মানববন্ধনে পাচঁখোলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ গৌড়া বলেন, ‘মাদারীপুর পৌর শহর থেকে খুব কাছে বসবাস করেও আঁড়িয়াল খাঁ নদের কারণে শহরের সঙ্গে যোগাযোগে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় পাঁচখোলা ইউনিয়নের জনগণের।
‘এ নদের উপর সেতু হলে পাঁচখোলাসহ আশপাশের ৬ ইউনিয়নের লক্ষাধিক লোকের দুর্ভোগ কমে আসবে।’
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসরাত হোসেন উজ্জ্বল বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় সেতু হচ্ছে, কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এতো গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি হচ্ছে না। এতে অন্তত এক লাখ মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কৃষকদের উৎপাদিত ফসলও কেনা-বেচা করতে কষ্ট হয়। শিক্ষার্থীদের নদী পার হয়ে শহরের পড়াশুনা করতে যেতে পারছে না। এ অবস্থায় প্রশাসনের কাছে জোর দাবি করছি, যেন অচিরেই সেতুটি নির্মাণ করা হয়।’
ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ‘এর আগেও আমরা মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি করেছি কিন্তু তার কোন বাস্তবায়ন হয়নি। আগের এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতার ফিজিবিলিটি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। তারপরেও কেন সেতুটি হচ্ছে না বুঝতে পারছি না। মাত্র একশ মিটারের ব্রিজ বানানো কোনো বড় বিষয় না।’
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান খান কালু।
পরে জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুনের কাছে সেতুর দাবিতে স্মারকলিপি দেয় গ্রামবাসী।
সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘এলাকাবাসীর সঙ্গে আমি একমত। ব্রিজটি খুবই দরকার। মাত্র একশ মিটারের একটি সেতুর জন্যে শহর আর গ্রাম আলাদা হয়ে আছে। অনেক সময় রাতে যাত্রীরা নৌকা বা ট্রলারে পার হতে গিয়ে দুঘর্টনারও শিকার হয়েছেন। আমরাও স্থানীয় সাংসদের মাধ্যমে সেতুটি দ্রুত নির্মাণের চেষ্টা করব।’
সেতু নির্মাণের বিষয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ আলী খান বলেন, ‘আমি জেলায় নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি আমি পুরোপুরি জানি না। তবে যতটুকু জেনেছি, মাঠ পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় থেকে টেন্ডার দিলেই কাজ শুরু হবে। আপাতত কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। এর বাইরে কিছু করার নেই।’