কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার মাঝিগাছা এলাকায় গত ১৯ মার্চ কুপিয়ে হত্যা করা হয় মাসুক মিয়াকে। অভিযোগ ওঠে, শবে বরাতের তবারক বিতরণ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তাকে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় ৮ জনের নামে মামলা হয়ে গ্রেপ্তার করা হয় দুইজনকে। অন্যরা এখনও পলাতক।
মাসুকের স্ত্রী রুবি আক্তারের অভিযোগ, পলাতক আসামিরা তাকে ফোন করে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। এতে দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে তিনি আতংকিত। স্বামীর মৃত্যুর পর সংসার চালানো নিয়ে অনিশ্চয়তার সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে নিরাপত্তাহীনতা।
এমন পরিস্থিতিতে সব আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান রুবি।
নিউজবাংলাকে রুবি বলেন, ‘মামলার প্রধান আসামি নাছির ও অহিদ মিয়াসহ অন্যরা মিলে আমার স্বামী মাসুককে হত্যা করে। এই ঘটনার পর এলাকাবাসী নাসির ও অহিদকে আটক করে মেরে হাসপাতালে পাঠায়। পুলিশ নাছির ও মামুন নামে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করলেনও অহিদ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।’
মামলার বাদী নিহতের ভাই মো. জালাল বলেন, ‘আমার ভাই মাসুক হত্যার মামলায় ৮ জনকে আসামি করেছি। এর মধ্যে ১ নম্বর আর ৫ নম্বর আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় আমরা এখন অনিরাপত্তায় ভুগছি।
‘আমার ভাই মাসুক দুইটি ছোট ছোট মেয়ে রেখে হত্যার শিকার হলো, তার স্ত্রী অসুস্থ, তারাও অনিরাপদ। আমার স্ত্রীর নাম্বারেও কে বা কারা ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও কথা বলে। ধারণা করছি এসব ওই আসামিদের কাজ। আমরা যতটুকু জানি আসামিরা কুমিল্লাতেই আছে।’
তিনি জানান, পুলিশ আরেকটু চেষ্টা করলেই অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারে। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবিও জানান।
একই দাবি জানান স্থানীয় মেম্বার হারুন উর রশিদ। তবে তিনি জানান, কারও ইন্ধনে মামলা যেন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত না হয় কিংবা নির্দোষ কেউ যেন সাজা না পায় সেদিকেও পুলিশকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক মোজাম্মেল হক জানান, পলাতকদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর আছে।
ইউপি মেম্বার হারুন বলেন, ‘পবিত্র শবে বরাতের রাতে এলাকার মসজিদে তবারক হিসেবে বিরিয়ানির ব্যবস্থা করা হয়। রাতে নামাজ ও দোয়া শেষে তবারক বিতরণের সময় কয়েকজন যুবকের বাগবিতণ্ডা হয়।
‘এর জেরে রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পশ্চিম মাঝিগাছা এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় ছুরিকাঘাতে তিনজন আহত হন। আহতদের কুমিল্লা মেডিক্যালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মাসুককে মৃত ঘোষণা করেন।’
এ ঘটনায় পরদিন কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন মাসুকের ভাই জালাল।
মামলার পলাতক আসামিরা হলেন অহিদ মিয়া, তার ভাই কবির হোসেন, মো. আশেক, জেসি আক্তার ও রানী বেগম।