রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে আধাবেলার হরতাল সফল বলে মনে করছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি- সিপিবি। হরতাল সফল করায় দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছে দলটি।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির দাম বাড়ানোর উদ্যোগ বন্ধের দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট সোমবার এই হরতাল কর্মসূচি পালন করে।
সোমবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত হরতাল শেষে এক বিবৃতিতে দেশবাসীকে এই অভিনন্দন জানায় বাম জোটের শরিক দলটি।
যদিও হরতালে রাজধানী ঢাকা গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক ছিল। এমনকি হরতাল হলেও যানজটে রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকা স্থবির ছিল সকালেও।
শুধু শাহবাগসহ কয়েকটি এলাকায় বিচ্ছিন্ন বিক্ষোভ করেছেন বাম জোটের নেতাকর্মীরা।
বিবৃতিতে সিপিবি জানায়, ‘দেশের অধিকাংশ মানুষের আয় সীমিত হয়ে যাওয়ার সময় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। একই সঙ্গে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের স্বার্থরক্ষা করে চলেছে। এমনকি দেশের মানুষের কথা উপক্ষো করে অযৌক্তিকভাবে গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির দাম বাড়ানোর পাঁয়তার করছে।
‘জনগণের দাবিকে উপেক্ষা করে, জনগণকে উপহাস করছে সরকারের মন্ত্রীরা। এর বিরুদ্ধে হরতালের মধ্য দিয়ে মানুষ তাদের রায় ঘোষণা করেছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, হরতালের আগে বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, খুলনা, নারায়ণগঞ্জ, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাওঁসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে দলটির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে।
বিভিন্ন জেলায় মাইক ভাড়া দিতে নিষেধ করা হয়েছে। গাইবান্ধা, ঠাকুরগাওঁ, খুলনা ও ঢাকায় ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও দাবি করে দলটি।
ঢাকার পল্টন মোড়, মোহাম্মদপুর, মিরপুর এবং নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে হামলায় প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার দাবি করেন দলটির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
এতো হামলার পরও সিপিবিসহ বাম জোটের নেতাকর্মীরা ধৈর্য ধরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখেছে বলে জানানো হয় বিবৃতিতে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন সিপিবির শিল্পী আক্তার, হযরত আলী, হোসেন আলী, মিয়া মো. জুয়েল, নুরুল ইসলাম গাজী, ছাত্র নেতা দীপক শীল, সুমাইয়া সেতু, সালমান রাহাত, মহিউদ্দিন রুমি, প্রিজম ফকির, আরমান, রাইসা, শাওন বিশ্বাস, রাকিব হাসান সুজন, কাওসার আহমেদ রিপন, শিতাংশু ভৌমিক অংকুর।
বিবৃতিতে, দক্ষ ও দুর্নীতিমুক্তভাবে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নিত্যপণ্যের বাফার স্টক, উৎপাদক ও ক্রেতা সমবায় গড়ে তোলা, পর্যাপ্ত ন্যায্য মূল্যের রেশনিং চালু ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভাঙার দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বাম জোটের অভিনন্দন
পুলিশি হামলা-আক্রমণ, জলকামান, টিয়ারশেল, লাঠিপেটা মোকাবিলা করে হরতাল সফল করায় দেশবাসীকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোটও।
জোটটিও হরতাল শেষে এক বিবৃতি দিয়ে এমন অভিনন্দন জানায়।
বিবৃতিতে বাম জোটের সমন্বয়ক সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘পুলিশের উসকানি এবং ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ সরকারি দলের সহিংস তৎপরতা উপেক্ষা করে এই হরতালে মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন, তা এই সরকার ও মুনাফাখোর বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দেশবাসীর পুঞ্জীভূত ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ।’
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, সোমবারের হরতালে সারা দেশে জোটের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন এবং অন্তত ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।