রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় ছুরিকাঘাতে দন্ত চিকিৎসক আহমেদ মাহী বুলবুল নিহত হওয়ার ঘটনায় ফেসবুকে শোক প্রকাশ করেছেন অনেকে।
স্ট্যাটাসে প্রিয় চিকিৎসকের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন তারা।
শেওড়াপাড়ার মেট্রোরেল স্টেশন এলাকায় রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ছুরিকাঘাতে নিহত হন বুলবুল।
পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আ স ম মাহাতাব উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নোয়াখালী যাওয়ার উদ্দেশে ভোরে শেওড়াপাড়ার বাসা থেকে বের হন বুলবুল। (আহত হওয়ার পর) বুলবুল তার সহকারীকে ফোন দিয়েছিলেন, তবে তিনি এসেছিলেন কি না, সেটা এখনও জানতে পারি নাই।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বুলবুলের ঊরুতে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। তার কাছে টাকা-পয়সা, মোবাইল ছিল, তবে ঘাতক কিছুই নেয় নাই।
‘তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল, তবে রক্তক্ষরণে মারা গেছেন। ঘটনাটা আমরা খতিয়ে দেখছি।’
প্রিয় চিকিৎসক নিহত হওয়ার এ খবরে বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনে কর্মরত আরাফাত সিদ্দিকী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘মেনে নিতে পারছি না। ডা. বুলবুল ভাই আমার ফ্যামিলি ডেন্টিস্ট ছিলেন। বন্ধুর মতো নিজে ফোন দিয়ে চিকিৎসা পরবর্তী খোঁজ নিতেন।
‘তার কাছে গেলে প্রত্যেকবার স্লোগান (আরাফাতের ছেলে) একটা আইসক্রিম পেত। আমরা পেতাম কাছের মানুষের সান্নিধ্য। এই নগরে এভাবেই হয়তো টুপ করে একদিন মারা যাব।’
ইত্তেফাকের রিপোর্টার জামিউল আহসান সিপু তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘গরিবের চিকিৎসক ডা. আহমেদ মাহী বুলবুল রোববার ভোর সাড়ে ৫টায় শেওড়াপাড়ায় ছিনতাকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন। ডা. বুলবুলের মগবাজারে রংপুর ডেন্টাল নামে একটি চেম্বার রয়েছে। সেখানে গরিব, বড়লোক সকলের তিনি চিকিৎসা করান।
‘তার স্বপ্ন ছিল গরিবের চিকিৎসা দেয়া। করোনার লকডাউনে অনেকের পাশে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন। আজ এই আত্মনিবেদিত চিকিৎসককে ছিনতাইকারীর হাতে প্রাণ দিতে হলো। তার পরিবারকে শোক ও সমবেদনা জানানোর ভাষা আমার নেই।’
অনলাইন পোর্টাল জাগো নিউজের বিনোদন ইনচার্জ লিমন আহমেদ জুয়েলের পোস্টের নিচে গিয়ে কমেন্টে লিখেন, ‘কী বললেন ভাই এটা! মানতেই পারছি না৷
‘এই সকালবেলা খবরটা শুনে বুকটা হাহাকার করে উঠল! হাস্যোজ্জ্বল একটা মানুষ। আল্লাহ ভাইকে বেহেস্তবাসী করুন।’
দৈনিক দেশ রূপান্তরের রিপোর্টার রিয়াজ হোসেন তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘সকাল সকাল এমন একটা খারাপ সংবাদ পেয়ে ঘুম ভাঙবে, চিন্তাও করিনি। ইত্তেফাকের গলির আড্ডার প্রিয় মুখ ডা. বুলবুল ভাই আর নেই। শেষবার দেখা হয়েছিল দাঁত দেখাতে গিয়ে। পরে বুলবুল ভাই ফোন করেছিলেন। আর যাওয়া হয়নি।
‘সে দিনই যে শেষ দেখা হবে, কল্পনাতেও ছিল না। জীবন কত ঠুনকো। কে, কখন, কীভাবে চলে যাবে, কেউ বলতে পারে না। ওপারে ভালো থাকবেন ভাই।’