বরগুনার তালতলীতে স্বামী মসজিদের ব্যাটারি ‘চুরি করায়’ দাম্পত্যজীবনের ইতি টেনেছেন এক গৃহবধূ।নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের বথিপাড়া এলাকায় শনিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ওই এলাকার ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম জমাদ্দার এবং বিয়ে ও তালাক নিবন্ধক (কাজি) মো. মুহিব্বুল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম জমাদ্দার জানান, ২০০৭ সালে বেতাগী উপজেলার সরিষামুড়ি ইউনিয়নের মো. ফোরকানের সঙ্গে বিয়ে হয় মাসুমা বেগমের। বিয়ের পর তালতলী উপজেলার বথিপাড়া সরকারি আশ্রয়ণে বসবাস শুরু করেন তারা। ফোরকান চুরি করতেন। স্বামীর এমন কাজে বিব্রত ছিলেন মাসুমা। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ লেগে থাকত। শনিবার ভোররাতে উপজেলার মধ্য পাওয়াপাড়া জামে মসজিদ ও পাওয়ারপাড়া দোকানঘাট জামে মসজিদ থেকে তিনটি সৌরবিদ্যুতের ব্যাটারি চুরি হয়। প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে সেগুলো বরগুনায় বিক্রি করতে যাওয়ার পথে ছোট বগী খেয়াঘাট এলাকায় ফোরকানকে সন্দেহবশত আটক করেন ইউপি সদস্য স্বপন মৃধা। এ সময় ফোরকান স্বীকার করেন এই ব্যাটারি তিনি মসজিদ থেকে চুরি করেছেন। পরে নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম জমাদ্দারের কাছে ফোরকানকে তুলে দেয়া হয়।বিষয়টি নিয়ে বথিপাড়া আশ্রয়ণে শনিবার দুপুরে বৈঠক ডাকা হয়। ওই বৈঠকে স্ত্রী মাসুমা উপস্থিত ছিলেন। স্বামী ফোরকান সেখানে মসজিদের ব্যাটারি চুরির অপরাধ স্বীকার করলে, মাসুমা তার সঙ্গে সংসার না করার সিদ্ধান্ত নেন। পরে ইউপি সদস্যদের উপস্থিতিতে কাজী মহিবুল্লাহকে ডেকে স্বামীর সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদ করেন। পরে ব্যাটারিগুলো মসজিদ কমিটির সদস্যদের ডেকে ফেরত দেয়া হয়।
ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম জমাদ্দার বলেন, ‘মসজিদের ব্যাটারি চুরি হওয়ার বিষয়টি মুসল্লিরা প্রথমে আমাকে জানায়। পরে ব্যাটারি চোরকে আটক করে আমাকে খবর দেয় স্থানীয়রা। স্থানীয়ভাবে বৈঠকের সময় মাসুমা তার স্বামীকে তালাক দেন।’
স্ত্রী মাসুমা বেগম বলেন, ‘যে স্বামী মসজিদ থেকে ব্যাটারি চুরি করতে পারে তার সঙ্গে আর যা-ই হোক ঘর-সংসার করা যায় না। এ জন্য কাজি ডেকে সঙ্গে সঙ্গেই তাকে তালাক দিয়েছি।’
কাজি মুহিব্বুল্লাহ বলেন, স্বামী ফোরকান মসজিদের ব্যাটারি চুরি করার শরিয়ত মোতাবেক তাকে তালাক দিয়েছেন মাসুমা।
এ বিষয়ে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, চুরির বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।