বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আগাছার দখলে মোগল আমলের জৌলুসময় বাড়ি

  •    
  • ২৩ মার্চ, ২০২২ ১০:০৯

সীতানাথ সাহা জানান, সওদাগর দুর্লভ সাহার বড় বড় জাহাজ ছিল। দেশ-বিদেশে বাণিজ্য করতেন। তার বাড়ির পাশের বাঁওড় মানুষের মুখে মুখে দুর্লভ সাহার বাঁওড় নামেই প্রচলিত ছিল।

প্রায় সব দালান থেকে খুলে পড়েছে ইট, পলেস্তারা। কিছু দালানের আর অস্তিত্বই নেই। পুরো বাড়ি ছেয়ে আছে নানা আগাছা-পরগাছায়।

দেখে বোঝার উপায় নেই, এটি ছিল মোগল আমলের ধনাঢ্য এক ব্যবসায়ীর রাজকীয় বাড়ি। ৮ একর জমিতে নির্মিত এই বাড়ির ভবনগুলো এককালে ছিল জৌলুসময়। বাড়ি গমগম করত নানা মানুষের পদচারণে।

এই বাড়ির অবস্থান ফরিদপুর সদর উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা গ্রামে। জেলার মাঝকান্দি-বোয়ালমারী সড়কের নড়িখালি বাসস্ট্যান্ড থেকে চাঁদপুর বাজার হয়ে এখানে যাওয়া যায়।

স্থানীয়রা জানান, বাংলার নবাব আলীবর্দী খাঁর আমলে দুর্লভ সাহা এই বাড়ি নির্মাণ করেন।

দুর্লভ সাহার বংশধর সীতানাথ সাহা এখন স্ত্রী বীণা সাহার সঙ্গে এই বাড়িতে থাকেন। স্বামী-স্ত্রী মিলে গরু পালন করেন। গরুর দুধ বিক্রি করে চলে সংসার। সীতানাথ ও বীণা দম্পতির তিন মেয়ের সবাই থাকেন শ্বশুরবাড়িতে।

কথা হয় ৮০ বছর বয়সী সীতানাথের সঙ্গে। তিনি দুর্লভ সাহার বংশের কততম পুরুষ তা বলতে পারেন না। চার পুরুষ পর্যন্ত বলতে পারেন। বংশপরম্পরায় তারা এই বাড়িতে থাকেন।

তিনি জানান, সওদাগর দুর্লভ সাহার বড় বড় জাহাজ ছিল। দেশ-বিদেশে বাণিজ্য করতেন। তার বাড়ির পাশের বাঁওড় মানুষের মুখে মুখে দুর্লভ সাহার বাঁওড় নামেই প্রচলিত ছিল।

সংস্কারের অভাবে কালের পরিক্রমায় বাড়িটি ধীরে ধীরে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় বাড়িটির ব্যাপক ক্ষতি হয়। দালানের কারুকার্য এখন ইতিহাস। প্রবেশপথের দোতলা নারায়ণ মন্দিরও ধ্বংসস্তূপে রূপ নিচ্ছে।

দুর্লভ সাহার ধ্বংসপ্রায় বাড়িটি ঘুরে দেখতে আসেন অনেকেই। এটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল বলে জানান চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শামছুন্নাহার মুইদ।

তিনি বলেন, ‘দুর্লভ সাহার বাড়ির একটি মন্দির ও ভবনের কিছু অংশ অবশিষ্ট আছে। আমি একে পুরোনো ঐতিহ্য বিবেচনা করে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। ইউএনওর মাধ্যমে মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছিলাম।’

সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন, ‘দুর্লভ সওদাগরের বাড়ি সম্পর্কে শুনেছি। একসময় এটি নাকি মোগল আমলের জৌলুসে ভরপুর ছিল। বাড়ির সামনে দুই একরের একটি দীঘিও আছে। আমরা একে পুরাতন ঐতিহ্য হিসেবে তালিকায় নিতে ব্যবস্থা নেব।’

সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল আলম জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি নিউজবাংলার প্রতিনিধির কাছেই প্রথম শুনেছেন। খোঁজ নিয়ে জানাবেন।

এ বিভাগের আরো খবর