ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধ জমিতে ভাসমান কাঠামো বা ডালি পদ্ধতিতে সবজি আবাদ শুরু হয়েছে। এতে কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
স্থানীয় কৃষি অফিস জানায়, হাওর জনিত কারণে নবীনগরের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জমি বর্ষাকালে পানিতে নিমজ্জিত থাকে। এ সময় শাক-সবজির প্রাপ্যতা কমে যায়, বাজারে দামও বেড়ে যায়। এসব জমিতে ভাসমান ডালি তৈরি করে সবজি আবাদে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
ফ্রিপ প্রকল্পের অর্থায়নে উপজেলার ইব্রাহিমপুর, নাটঘর, রছুল্লাবাদ, সাতমোড়া, সলিমগঞ্জ এবং বড়িকান্দি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ভাসমান ডালি পদ্ধতিতে সবজি আবাদ করা হচ্ছে। কৃষি বিভাগ এ জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে আসছে।
ইব্রাহিমপুর গ্রামের কৃষক কাওছার মিয়া বলেন, "আগে বর্ষাকালে তিন-চার মাস জমি পতিত পড়ে থাকত। এবার উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ১০ শতাংশ জায়গায় ভাসমান পদ্ধতিতে লাউ আবাদ করেছি। ইতিমধ্যে প্রায় ২০০ লাউ বিক্রি করে ১৫ হাজার টাকা আয় করেছি। আগামীতে আরও জমিতে এ পদ্ধতিতে চাষ করব।"
নাটঘর ইউনিয়নের কুড়িঘর গ্রামের কৃষক সুমন মিয়া জানান, আমিই প্রথম এ ইউনিয়নে ডালি পদ্ধতিতে সবজি আবাদ শুরু করেছি। এ বছর ১৮ শতক জমিতে ময়না লাউ আবাদ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করতে পারব।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন, ফ্রিপ প্রকল্পের আওতায় দুই শতাধিক কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ভাসমান ডালি কাঠামো তৈরি ও বীজ-সার সরবরাহ করে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রযুক্তি আগামী দিনে এ অঞ্চলের জন্য দারুণ সম্ভাবনাময়।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ডালি পদ্ধতিতে আগাম ও অসময়ে সবজি উৎপাদন সম্ভব হওয়ায় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি কৃষকদের বাড়তি আয়ের সুযোগও তৈরি হচ্ছে।