বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘মারে নিয়া অনেক আশা ছিল, কিন্তু মইরা গেল’

  •    
  • ২১ মার্চ, ২০২২ ১৭:৫৬

মাকে হারিয়ে শোকে পাগলপ্রায় দশম শ্রেণির ছাত্রী অহনা বলে, ‘বাবায় মানিকগঞ্জে লাইফ ইন্স্যুরেন্সে কাজ করে। সব সময় মা ছোট ভাই আর আমার খোঁজ রাখত। নিজে স্কুলে নিয়ে যাইত। রাতে নিজ হাতে খাইয়ে দিত। এখন তো আমার মা নাই।’

‘আমার মারে নিয়া অনেক আশা ছিল, কিন্তু মা মইরা গেল। আমি কার কাছে থাকুম। আমার সব শেষ হইয়া গেল।’

ট্রাকচাপায় মাকে হারিয়ে এভাবেই বিলাপ করে মূর্ছা যাচ্ছিল মেয়ে আইরিন সুলতানা অহনা।

সোমবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে মানিকগঞ্জের শিবালয়ে ঠিকাদারি কাজের একটি ট্রাক আব্দুল আলিম মেমোরিয়াল স্কুলের ভেতর ঢুকে পড়ে। ট্রাকের চাপায় স্কুলের শিক্ষক ফাতেমা আক্তারসহ এক শিক্ষার্থী নিহত হন।

এতে আহত হন আরও ছয়জন। তাদের মানিকগঞ্জ ও সাভার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত ফাতেমার বাড়ি শিবালয়ের উলাইল ইউনিয়নের ভাকলা এলাকায়। তার স্বামীর নাম আওলাদ হোসেন। অন্য নিহত শিক্ষার্থী সাত বছর বয়সী জারিন তাসনিমের বাড়ি ঢাকার ধামরাইয়ে।

মাকে হারিয়ে শোকে পাগলপ্রায় দশম শ্রেণির ছাত্রী অহনা বলে, ‘বাবায় মানিকগঞ্জে লাইফ ইন্স্যুরেন্সে কাজ করে। সব সময় মা ছোট ভাই আর আমার খোঁজ রাখত। নিজে স্কুলে নিয়ে যাইত। রাতে নিজ হাতে খাইয়ে দিত। এখন তো আমার মা নাই।’

মেয়েকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ফাতেমার মা মরিয়ম বেগমও। বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘একটা মেয়ের জন্য আল্লারে কত ডাকছি। আর সেই মেয়েটা মরে গেল। আজক্যা সকালেও হাসিমুখে আমার মেয়ে স্কুলে গেল। আর ফিরা আইল লাশ হয়ে। ও তো আমার মেয়ে ছিল না, আমার মা ছিল। মায়ের মতো আমার খবর রাখত। আমি ওকে মা বলে ডাকতাম। আল্লায় আমার একি করল।’

নিহতের স্বামী মো. আওলাদ হোসেন বলেন, ‘২০১৭ সালে স্কুল প্রতিষ্ঠার পর সেখানে চাকরি নেয় ফাতেমা আক্তার। এরপর অহনাকে ওই স্কুলে ভর্তি করে। প্রতিদিন সকালে মা-মেয়ে একসঙ্গে স্কুলে যাইত। আল্লাহ আমার এত বড় ক্ষতি করল কেন।’

শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, এনডিই নামের একটি ঠিকাদারি কোম্পানির গাড়ি স্কুলে ঢুকে পড়ে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এনডিই কোম্পানির প্রতিনিধি মো. আইনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উন্নয়নকাজের জন্য আমাদের গাড়ি ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু গাড়ি রাখার জায়গা না থাকায় ওই স্কুলের জায়গা ভাড়া নিই। তবে দুর্ঘটনার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

ওসি শাহিনুর রহমান বলেন, ‘নিহতদের দাফন শেষ করে পরিবার মামলা করবে।’

এ বিভাগের আরো খবর