বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি হচ্ছেন কে

  •    
  • ১৯ মার্চ, ২০২২ ২১:০১

দীর্ঘদিন পর সম্মেলনের আয়োজনে নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ। আর কাউন্সিল ঘিরে তৎপরতা চালাচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা। সোমবারের কাউন্সিলে তিনটি পদে নির্বাচন হবে। তবে বেশি আগ্রহ তৈরি হয়েছে সভাপতি পদকে ঘিরে।

দল দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় নেই। তার পরও নেতারা বিভক্ত কোন্দলে। অনেকে নিষ্ক্রিয়ও। এর প্রভাবে স্থবিরতা দেখা দিয়েছিল দলীয় কার্যক্রমে। তবে জেলা বিএনপির সম্মেলন ঘিরে ফের উজ্জীবিত নেতাকর্মীরা।

প্রায় ছয় বছর পর হতে যাচ্ছে সিলেট জেলা বিএনপির ‘দ্বিবার্ষিক সম্মেলন’। সোমবার সকালে শুরু হবে এই সম্মেলন। এরপর হবে কাউন্সিল।

দীর্ঘদিন পর সম্মেলনের আয়োজনে নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ। আর কাউন্সিল ঘিরে তৎপরতা চালাচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা। সোমবারের কাউন্সিলে তিনটি পদে নির্বাচন হবে। তবে বেশি আগ্রহ তৈরি হয়েছে সভাপতি পদকে ঘিরে।

সিলেট নগরের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সোমবার সকালে জেলা বিএনপির সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদির লুনা। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এ ছাড়া দলের সহসভাপতি জেড এম জাহিদ হোসেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন জীবন অতিথি হিসেবে থাকবেন।

এর আগে সর্বশেষ ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিলেট জেলা বিএনপির কাউন্সিল হয়। এতে কাউন্সিলরদের ভোটে আবুল কাহের চৌধুরী শামীম সভাপতি ও আলী আহমদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

এই কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর ২০১৯ সালের ২ অক্টোবর কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয় আহ্বায়ক কমিটি। কামরুল হুদা জায়গীরদারকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছিল। তিন মাসের এই কমিটি প্রায় আড়াই বছর পার করে দিয়েছে।

সিলেট জেলা বিএনপির এবারের কাউন্সিলেও সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন আগের কমিটির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী।

সভাপতি পদে আরিফুল হক চৌধুরীর প্রার্থী হওয়ায় বদলে গেছে সব হিসাব-নিকাশ। আরিফুল হক এর আগে মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। মহানগর বিএনপির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। এবার কাউন্সিলের আগে হঠাৎই জেলার সভাপতি প্রার্থী হন তিনি।

দল যখন ক্ষমতায়, তখন বিভক্তি ছিল সিলেট বিএনপিতে। তখন ছিল এম সাইফুর রহমান ও এম ইলিয়াস আলী গ্রুপে বিভক্তি। দল ক্ষমতার বাইরে গেলেও বিভক্তি কমেনি। এখন সিলেটে বিএনপি মূলত দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মুক্তাদির আহমদ এবং মেয়র আরিফুল হক গ্রুপে বিভক্ত। এ ছাড়া নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর অনুসারীদেরও রয়েছে আলাদা বলয়। তাদের নেতৃত্বে রয়েছেন ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা রুশদীর।

সভাপতি পদে প্রার্থী আবুল কাহের শামীম ও কাইয়ুম চৌধুরী যথাক্রমে খন্দকার মুক্তাদির ও ইলিয়াস আলী বলয়ের সমর্থনপুষ্ট বলে জানা গেছে।

এই দুই বলয়ের সঙ্গেই রয়েছে আরিফুল হক চৌধুরীর দূরত্ব। খন্দকার মুক্তাদির বলয় যেকোনো মূল্যে আরিফের সভাপতি হওয়া ঠেকাতে মরিয়া। দলীয় কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয় থেকে সরকারি দল ও মন্ত্রীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলারও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।

অন্যদিকে রাজনীতি ও ভোটের মাঠে নিজের ক্যারিশমার প্রমাণ একাধিকারই রেখেছেন আরিফ। ফলে সভাপতি পদের লড়াই নিয়ে তৈরি হয়েছে বিশেষ আগ্রহ। তবে তিন প্রার্থীই জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।

আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি প্রার্থী হয়েছি, বাকিটা কাউন্সিলররা বিবেচনা করবেন। আশা করছি তারা আমার সঙ্গে থাকবেন।

আবুল কাহের শামীম বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানকে দেশে ফেরানো ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন নিশ্চিতের আন্দোলন জোরদার করতে আমি জেলা বিএনপির সভাপতি প্রার্থী হয়েছি। আমি সব সময় রাজপথে সক্রিয় ছিলাম। আশা করছি দলের নেতারা তা মূল্যায়ন করবেন।’

অপর সভাপতি প্রার্থী কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘আমি কোনো বলয়ের নই। সবার সঙ্গেই আমার সখ্য। বিভক্তি এড়িয়ে দলকে ঐক্যবদ্ধ করতেই কাউন্সিলরা আমাকে মূল্যায়ন করবেন।’

সিলেট জেলা বিএনপি সূত্রে জানা যায়, সোমবারের কাউন্সিলে সভাপতি পদ ছাড়াও সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচন হবে। এই তিন পদে ১৩ জন প্রার্থী হয়েছেন।

সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবদুল আহাদ খান জামাল, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবদুল মান্নান, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা কামরুল হাসান চৌধুরী শাহীন ও সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামাল মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আর সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য লোকমান আহমদ, জেলা বিএনপির সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক মুজিবুর রহমান মুজিব, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাকিল মোর্শেদ ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শামীম আহমদ।

নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের প্রধান আব্দুল গাফ্ফার বলেন, কাউন্সিলে জেলার আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা ছাড়াও জেলার আওতাধীন ১৩টি উপজেলা ও পাঁচটি পৌর কমিটির সদস্যরা ভোট দেবেন। মোট ভোটার ১ হাজার ৮১৮ জন।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার বলেন, ‘সম্মেলন ও কাউন্সিল সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ বিরাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনই প্রমাণ করে বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল এবং সর্বক্ষেত্রে গণতন্ত্র চর্চায় বিশ্বাসী।’

এ বিভাগের আরো খবর