জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ঘিরে গোপালগঞ্জ এখন উৎসবমুখর।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে বৃহস্পতিবার টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলীয়প্রধানকে স্বাগত জানাতে টুঙ্গিপাড়াসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে তোরণ নির্মাণ করেছেন নেতাকর্মীরা। তাদের মাঝে দেখা দিয়েছে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা।
এবার জাতির পিতার জন্মদিনের সব কর্মসূচি টুঙ্গিপাড়ায় করার ঘোষণা দিয়েছে বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি। সেখানে ‘টুঙ্গিপাড়া: হৃদয়ে পিতৃভূমি’ শিরোনামে সাত দিনব্যাপী কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সের শোভাবর্ধন এবং শিশু সমাবেশ ও লোকজ মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি শেষ করেছে জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হক বিশ্বাস জানান, প্রধানমন্ত্রীকে গত দুই বছর কাছে পাননি টুঙ্গিপাড়াবাসী। তাকে দেখতে সবাই উন্মুখ হয়ে আছেন।
টুঙ্গিপাড়া পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল জানান, উপজেলার শোভাবর্ধনসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে পৌরসভা।
কর্মসূচির বিষয়ে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জানান, শুক্রবার আওয়ামী লীগের উদ্যোগে টুঙ্গিপাড়ায় আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জীবন এবং স্বাধীনতার বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হবে।আওয়ামী লীগ জানায়, ধারাবাহিকভাবে ১৯ মার্চ ছাত্রলীগ, ২০ মার্চ শ্রমিক লীগ, ২১ মার্চ কৃষক লীগ, ২২ মার্চ যুবলীগ, ২৩ মার্চ যুব মহিলা আওয়ামী লীগ, ২৪ মার্চ মহিলা আওয়ামী লীগ এবং ২৫ মার্চ স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা হওয়ার কথা রয়েছে।
১৯ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) উদ্যোগে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প হবে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল বাসার খায়ের বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়াকে সাজানো হয়েছে। নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। এসব কর্মসূচিতে যেখানে যখন প্রয়োজন, দল থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে।’
‘টুঙ্গিপাড়া: হৃদয়ে পিতৃভূমি’
টুঙ্গিপাড়ায় ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ১০২তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ‘টুঙ্গিপাড়া: হৃদয়ে পিতৃভূমি’ শিরোনামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
সোমবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ১৭ মার্চ জাতির পিতার সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। পরদিন থেকে সেই মঞ্চে আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় এবং জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ব্যবস্থাপনায় প্রতিদিন আলোচনা অনুষ্ঠান চলবে। এতে অংশ নেবেন দেশের বরেণ্য রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, মন্ত্রী, সাংসদসহ বিশিষ্ট আলোচকরা।
২১ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত টুঙ্গিপাড়ার সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ মাঠে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ লোকশিল্প ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ‘মুজিববর্ষ লোকজ মেলা’ অনুষ্ঠিত হবে।
মেলায় প্রতিদিন বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের ওপর চলচ্চিত্র প্রদর্শন, স্যুভেনির প্রকাশ, পোস্টার প্রদর্শনসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে।
গত বছরের নভেম্বর মাসে জাতির পিতার সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি। কিন্তু এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষাকে বিবেচনায় নিয়ে অনুষ্ঠানের সময় পরিবর্তন করা হয়।
সিদ্ধান্ত হয়, ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে আয়োজন করা হবে। কিন্তু সে সময় করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আবার সময় পরিবর্তন করে ১৭ মার্চ নির্ধারণ করা হয়।