বর্তমানে ইতিহাস নিয়ে অনেক হিসাব-নিকাশ করে কথা বলতে হয় বলে মন্তব্য করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে শুক্রবার ভাষা আন্দোলনের স্থপতি প্রিন্সিপাল আবুল কাসেমের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাঙলা ভাষা: সংকট ও সমস্যার সমাধানে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘বাঙলা উত্তরাধিকার’ আয়োজিত এ বৈঠকে নুর বলেন, ‘এখন ইতিহাস নিয়ে কথা বলতে গেলে অনেক হিসাব-নিকাশ করে বলতে হয়। কারণ ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে দেবে; মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধী বানিয়ে দেবে।
‘বর্তমান সরকার চেতনার ক্ষুরধার বাহক। কোনো মতে চেতনায় আঘাত লাগলেই তারা ধরে ফেলে। তাদের মতে চেতনা যে কী, সেটা আমরা সবাই জানি।’
ভাষা আন্দোলন নিয়ে নুর বলেন, ‘আমাদের আবেগ, অস্তিত্বের জায়গা ভাষা আন্দোলন। সেটি নিয়ে মাত্র তিনটি গান। বঙ্গবন্ধুর মতো মহান নেতাকে নিয়েও মাত্র তিনটি গান। ব্যক্তিগতভাবে যার যতটুকু মূল্যায়ন...এখন বঙ্গবন্ধুর কথা বললে সমস্যা।
‘বাংলাদেশে বড় অংশ আছে, যারা বঙ্গবন্ধুর দল করে না, তারা নাখোশ হয়। ব্যালেন্স করে বলতে হয়। আবার তাদের নেতাদের কথাও। আমরা বলি, যার যতটুকু সম্মান, আমরা সেটুকু দিতে চাই।’
প্রিন্সিপাল আবুল কাসেমকে নিয়ে নুর বলেন, ‘ভাষাসৈনিক গাজীউল হকের কথায়, সামগ্রিকভাবে ভাষাকে আন্দোলনকে যদি ছন্দময় একটি কাব্যে বিবেচনা করা যায়, তাহলে প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম সে কাব্যের উপেক্ষিত নায়ক। ভাষা আন্দোলনে তিনি নায়ক, কিন্তু উপেক্ষিত।
‘আমরা এখন দেখি, ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে পড়াশোনা নেই।’
তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে একজন ব্যক্তি সাংবিধানিক পদ থেকে অবসরে যাওয়ার পর বাংলাদেশের অবস্থা নিয়ে বই লিখেছেন, কিন্তু প্রকাশ করতে ভয় পাচ্ছেন।
‘তাই আমি বলতে চাই, ভাষা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ভাষা তার জায়গায় আছে। সমস্যা আমাদের ব্যবহারকারীদের, আমাদের প্রয়োগে।’
শহীদ মিনার প্রায় সারা বছর অরক্ষিত থাকে অভিযোগ করে নুর বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে শহীদ মিনার ধুয়েমুছে চকচক করা হয়; তিন স্তরের নিরাপত্তা দেয়া হয়, কিন্তু অন্য সময়ে কুকুর, বিড়াল আর মাদকাসক্তদের আড্ডাখানায় রূপান্তর হয়ে যায়।
‘সেগুলো দেখার কেউ নেই। এক দিনের কৃত্রিমতা দিয়ে কী হবে? যাদের সম্মান প্রাপ্য, তাদের সম্মান দেয়া হয় না।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাঙলার উত্তরাধিকারের আহ্বায়ক আবু তৈয়ব হাবিলদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাখাওয়াত আনসারী, সাবেক সচিব কাশেম মাসুদসহ অনেকে।