নগরায়ণের ফলে কিডনি জটিলতার রোগী ক্রমেই বাড়ছে। দেশে দুই কোটির বেশি মানুষ কোনো না কোনোভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত।
বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে বুধবার ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসাপাতালে এক মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা এমন তথ্য জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা বলেছেন, কারো কিডনি বিকল হয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে ডায়ালাইসিস না করিয়ে প্রতিস্থাপন করানোই ভালো। প্রতিস্থাপনে খরচ ও জটিলতা কম।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজির সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. ফিরোজ খান বলেন, ‘কিডনিবিষয়ক বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় ৮৫ কোটি।
‘বাংলাদেশে দুই কোটির বেশি লোক কোনো না কোনোভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত। দিন দিন কিডনি রোগের এই প্রাদুর্ভাব বেড়ে চলেছে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, ২০৪০ সালের মধ্যে ৫০ লাখের বেশি কিডনি বিকল রোগী চিকিৎসার অভাবে মারা যাবে। মৃত্যুঘাতী হিসেবে কিডনি রোগের অবস্থান দুই যুগ আগে ছিল ২৭তম। বর্তমানে এটা দাঁড়িয়েছে সপ্তম এবং ২০৪০ সালে পঞ্চম অবস্থানে পৌঁছাবে।
ইনসাফ আল বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশনের কারণে দিন দিন কিডনি রোগী বাড়ছে। যত বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন হবে, তত বেশি কিডনি, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগী বাড়তে থাকবে।’
ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালের কিডনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এহতেশামুল হক বলেন, ‘কিডনি বিকল হয়ে গেলে ডায়ালাইসিসের চেয়ে প্রতিস্থাপন ভালো। তাতে ব্যয়ও কম হয়। একজন কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিসে গড়ে মাসে ১৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়। আর কিডনি প্রতিস্থাপনে এককালীন ব্যয় হয় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। আর প্রতিস্থাপনের পর মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। আর এই চিকিৎসাটা আমাদের হাসপাতালে সফলভাবে করা হচ্ছে।’
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, মহান স্বাধীনতা দিবস ও বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে মাসব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে সাংবাদিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজির সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. ফিরোজ খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কিডনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এহতেশামুল হক। সভাপতিত্ব করেন ইনসাফ বারাকাহ কিডনি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিশিষ্ট ইউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. এম ফখরুল ইসলাম।