বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিএনপিকে ভোটে চান সিইসি, চায়ের আমন্ত্রণ

  •    
  • ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৫:৪৭

‘বিএনপি বলেছে, নির্বাচনে আসবে না। তাতে বিএনপিকে আমরা আহ্বান জানাতে পারব না? বলব, আসেন একটু চা খাই, কথা বলি। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। আমরা অন্তরের অন্তস্তল থেকে প্রার্থনা ও প্রত্যাশা করি সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’

বর্তমান সরকারের অধীনে ভোটে না গিয়ে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আবার আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া বিএনপিকে ভোটে দেখতে চান নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহ আছে তার। এ জন্য চায়ের দাওয়াত দিতে চান তিনি।

সোমবার দায়িত্ব গ্রহণ করেই গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়ে এক প্রশ্নের জবাবে এই প্রত্যাশার কথা বলেন তিনি।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই সপ্তাহ পর নতুন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করল। দুই দিন আগে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ৫ সদস্যের কমিশন বেছে নেয়ার পরদিন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কাছে শপথ নেন তারা।

পরদিন সকাল পৌনে ১০টার দিকে সিইসি যান আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে। এর আগে ও পরে আসেন অন্য চার কমিশনার বেগম রাশিদা সুলতানা, আহসান হাবীব খান, মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান।

সেখানে যাওয়ার পর নতুন কমিশনকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন নির্বাচন কমিশন সচিব হুমায়ুন কবির খন্দকার। এরপর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বসে নতুন কমিশন।

এরপর গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে আসে নতুন কমিশন। সিইসি এ সময় সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানান। রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোটের মাঠে অটল থাকার পরামর্শ দেন। তিনি রাশিয়ার আক্রমণের মুখেও ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ভলদিমির জেলেনস্কি যেভাবে অটল থেকেছেন, তা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভোটের মাঠে টিকে থাকার পরামর্শও দেন দলগুলোকে।

- বিএনপি বলেছে, তারা নির্বাচনে যাবে না। তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন কি না- এমন প্রশ্ন ছিল সিইসির কাছে।

জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করব। বিএনপি বলেছে, নির্বাচনে আসবে না। তাতে বিএনপিকে আমরা আহ্বান জানাতে পারব না? বলব, আসেন একটু চা খাই, কথা বলি। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই।’

সবাই ভোটে আসবে- এমন আশা করে তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তরের অন্তস্তল থেকে প্রার্থনা ও প্রত্যাশা করি, সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’

- বিএনপি ও জাতীয় পার্টি বলেছে, আপনারা নিরপেক্ষ অবস্থান নিতে পারবেন না…

সিইসি বলেন, ‘আমি তো কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে সিল দিতে পারব না বা বাক্সে ভরব না। আমি যেটা বলেছি, অনুকূল পরিবেশ। পলিটিক্যাল লিডারশিপ যদি তাদের দায়িত্ব শেয়ার না করে, তাহলে ইসি একা পারবে না।

‘আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও বসব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ভোটকেন্দ্র। সেখানে বিকেল পর্যন্ত বসে থাকতে হবে, একেবারে ভোট গণনা পর্যন্ত। এজেন্টদের তাড়িয়ে দিলে আমাদের অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব।'

- দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ভোট নাকি বিএনপিকে আস্থায় আনা বেশি চ্যালেঞ্জিং?

সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন এখন সাংবিধানিকভাবেই দলীয় সরকারের অধীনে হয়। সরকারই নির্বাচন করে। একটা সরকার তো থাকবেই, নির্দলীয় বা দলীয়। দুটিই আমরা দেখেছি। কিন্তু ইসিও থাকে, দায়িত্ব তাদেরও থাকে।

‘আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ভোটারদের আস্থায় আনা। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করব ভোটাররা যাতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। এ জন্য সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।’

ভোটের মাঠ ছেড়ে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে সিইসি বলেন, ‘যারা নির্বাচন করবে তাদের কর্মীদের বলতে হবে সেন্টারে সেন্টারে থাকো। প্রতিপক্ষের শক্তি দেখে পালিয়ে যাওয়া যাবে না। ধরেন, সন্দ্বীপে ভোট হচ্ছে। আমি যদি প্রতিপক্ষের শক্তি দেখে জাহাজে করে চট্টগ্রাম চলে যাই, তাহলে নির্বাচন হবে না। দোকান যদি খোলা থাকে তাহলে অবাধ ভোট পড়বেই। লড়াইটা করতে হবে।’

-নির্বাচন কি কর্মীরা সুষ্ঠু করবে?

সিইসি বলেন, ‘আমি তো বলেছি। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এককভাবে ইসি করতে পারবে না। এজেন্সিগুলো কাজ করবে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি সবাই পলিটিক্যাল লিডারশিপের অংশ। সবাইকেই কাজ করতে হবে। দলগুলোকে অহংকার ত্যাগ করে কথা বলতে হবে।

‘দেখেছি নির্বাচনে কর্মীরা থাকে। তারা ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে যায়। এদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে, আস্থা রাখতে হবে। আমরা নির্বাচনমুখী করতে চাই সবাইকে।’

-ভোট রাতে হবে না দিনে হবে?

সিইসি বলেন, ‘সেটা সময়ই বলে দেবে। ভোট ভোটের সময় হবে। এসব এপিসোডে আমরা যেতে চাই না। অতীতে কী হয়েছে জানি না। আমি অস্ট্রেলিয়া থেকে ভোট দিয়েছি। দিনের ভোটই দেখেছি।’

-জনগণের আস্থা কীভাবে ফিরিয়ে আনবেন?

সিইসি বলেন, ‘আস্থা বিনষ্ট হয় আবার ফিরেও আসে। আছে নাকি নাই সেটা দেখতে হবে। নষ্ট হয়ে থাকলে ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে হবে। কোথাও কোনো দুর্নীতি দেখলে আমাদের জানান। আর পলিটিক্যাল লিডারশিপের মধ্যে সমঝোতা লাগবে যে আপনারা ভোটে সহিংসতা করবে না, ঝামেলা করবে। তাদের মধ্যে ন্যূনতম সমঝোতা লাগবে। আমরা তাদের অনুনয় করব।'

- সিইসির কাছে আরও প্রশ্ন ছিল, তিনি আগের দুটি নির্বাচন সম্পর্কে মূল্যায়ন করবেন কি না।

জবাবে তিনি বলেন, ‘আগের নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা আছে কি না, সফলতা আছে কি না, এমন প্রশ্ন আসবেই। আমরা জ্ঞান আহরণ করব। পত্রিকায় অনেক লেখালেখি হয়। আমরা সেগুলোও পড়ি। যেখানে শিক্ষা নেয়ার প্রয়োজন হবে, সেখানে আমরা শিক্ষা নেব। সঠিক নির্বাচন করার জন্য এটুকু আমাদের কাজের অংশ। এসব নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন, মূল্যায়ন প্রয়োজন। আমরা সবকিছুই করব।'

-রাজনৈতিক নেতৃত্ব নষ্ট হয়ে গেছে কি না- এমন প্রশ্নও রাখেন একজন গণমাধ্যম কর্মী।

জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, 'আমাদের সামর্থ্য অসীম না। এটা আপেক্ষিক। ইসি অসীম শক্তির অধিকারী না। এটা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই।

‘সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সব রাজনৈতিক দলকে নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে হবে না। আমি সবাইকে আহ্বান জানাব, আমাদের ডেমোক্রেটিক সিস্টেমটা রিস্টোর করুন।’

এ বিভাগের আরো খবর