ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা চত্বরে উদ্বোধনের আট মাসের মাথায় নবনির্মিত মডেল মসজিদে ফাটল ধরেছে।
স্থানীয়রা বুধবার মসজিদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার ছয়টি দেয়ালে ফাটল দেখেন।
গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৮ সালের শেষ দিকে গণপূর্ত অধিদপ্তর মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু করে। রংপুরের মেসার্স খায়রুল কবির নামে এক ঠিকাদার কাজটি পান।
গত বছরের ২১ জুন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মসজিদটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণপূর্ত জানায়, এর নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছে ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। নির্মাণ শেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কাজটি বুঝে নেয়ার কথা। তবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কাছে হস্তান্তর না করায় মসজিদটির ব্যবহার এখনও শুরু হয়নি।
বিপুল টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত মডেল মসজিদটি উদ্বোধনের আট মাসেই ফাটল ধরায় স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এলাকার আনোয়ারুল হক বলেন, ‘হরিপুরে আধুনিক এই মডেল মসজিদটি উন্নয়নের মডেল হবে, এমন প্রত্যাশা করেছিলাম। অথচ নামাজ শুরুর আগেই মসজিদে ফাটল মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিল। মনে হয়, পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হয়নি।’
নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। তা না হলে এত তাড়াতাড়ি ফাটল ধরার প্রশ্নই ওঠে না। এমন অভিযোগ স্থানীয় মাহিন হাসানের। বলেন, ‘ঠিকাদার ইচ্ছামতো কাজ করেছেন, তাই এমন পরিণতি। কাজের মধ্যে বড় কোনো ত্রুটি এড়িয়ে গেছেন। ঝড়, ভূমিকম্প ছাড়াই এমন ফাটল আতঙ্কের।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, ‘যে ঠিকাদার কাজটি পেয়েছিলেন, তিনি করেননি। বুলু নামে অন্য একজন কাজটি করেছেন।’
মসজিদটির নির্মাণ কাজ করা কথিত ঠিকাদার বুলু ঘটনা স্বীকার করে বলেন, ‘রংপুরের খায়রুল কবির নামে এক ঠিকাদার কাজটি পেয়েছিলেন। আমরা কয়েকজন তার কাছ থেকে কাজটি নিয়েছি। এখনও কাজ শেষ করিনি। ফাটলের বিষয়ে শুনেছি। আমরা তা সংস্কার করে দেব।’
খায়রুল কবিরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ফোন দিলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
উদ্বোধনের কয়েক মাস পরই মসজিদে ফাটলের ঘটনায় হরিপুর উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউর হাসান মুকুল দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি ফাটলের কারণ খতিয়ে দেখার দাবি জানান।
ঠাকুরগাঁও গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) এম কে এম নুরুল হাসান মসজিদটি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। তিনি এ ঘটনায় আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানান।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘মডেল মসজিদটির বিভিন্ন দেয়ালে ফাটলের তথ্য পেয়েছি। রোববার ঢাকা থেকে গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা আসবেন পরিদর্শনে।’