বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইসিতে যারাই আসুক, পড়তে হবে বিএনপির বিরোধিতায়

  •    
  • ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২২:০২

দলটির মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এটা নিয়ে তো আমরা ক্লিয়ার করে দিয়েছি। তার পরও আপনারা কেন প্রশ্ন করছেন? যারা জোর করে ক্ষমতায় থাকে তারা কি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন দেবে? আগামী নির্বাচন কমিশন হবে আরেকটা ভাঁওতাবাজি। দেখবেন আরেকজন হুদা (সাবেক সিইসি কে এম নুরুল হুদা) বের করে নিয়ে আসছে তারা।’

নির্বাচন কমিশনে যারাই আসুক না কেন, রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি তাদের বিরোধিতায় নামতে যাচ্ছে।

দলটির অভিযোগ, সার্চ কমিটির মাধ্যমে এর আগেও যে দুটি নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে, তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারেনি। কমিশন দুটি আওয়ামী লীগের জয় নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে। একই প্রক্রিয়ায় তৃতীয় নির্বাচন কমিশনও নিরপেক্ষ হতে পারবে না বলেও মনে করে বিএনপি।

কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব ছাড়ার পর নতুন কমিশনে কারা আসছেন, সেটি নিশ্চিত হয়নি এখনও।

নির্বাচন কমিশনে নিয়োগে আইন পাসের পর সার্চ কমিটি ১০টি নাম চূড়ান্ত করেছে। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে নামগুলো জমা পড়লে তিনি সেখান থেকে পাঁচজনকে বেছে নেবেন, যারা আগামী জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করবেন।

তবে বিএনপি ২০১২ ও ২০১৭ সালে নির্বাচন কমিশন গঠনের সময় রাষ্ট্রপতির সংলাপ ও সার্চ কমিটিকে নাম দিলেও এবার তারা এসব থেকে দূরে। তারা নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ফিরে গেছে। তাদের দাবি, বর্তমান সরকার পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিক। তারা এসে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে এবং সেই কমিশন ভোটের আয়োজন করবে।

এ অবস্থায় বিএনপির সিদ্ধান্ত হচ্ছে আন্দোলন। ২০১৩-১৪ এবং পরে ২০১৫ সালে দুই দফা আন্দোলনে নেমে খালি হাতে ঘরে ফিরলেও এবার আবার একই পথে নামতে চাইছে তারা। এর আগে জোটের আকার বড় করার কথাও বলছে তারা।

বিএনপি নেতারা বলছেন, তাদের প্রধান দাবি সরকারের পদত্যাগ, দ্বিতীয়টি হবে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সার্চ কমিটি যাদের দিয়ে করেছে তারা প্রত্যেকেই তাদের (আওয়ামী লীগের) লোক। আজ আবার নামগুলো পাঠাবে রাষ্ট্রপতির কাছে, যাদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে দেখা যাবে তারা সেই হুদার মতোই লোক।’

নতুন যে নির্বাচন কমিশন গঠন হতে যাচ্ছে, তার ওপর আওয়ামী লীগের প্রভাব থাকবে বলে মনে করেন বিএনপির একজন নেতা। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ডাকাত কি রাতারাতি পির সাহেব হয়ে যাবে। যারা জোর করে ক্ষমতায় থাকে, তারা কি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন দেবে?’

নির্বাচন কমিশনে কে আসবে, সেটা নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথা নেই জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের দরকার নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার৷ এ সরকারের অধীন কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। নির্বাচন কমিশন আমাদের আলোচ্য বিষয় নয়।’

যে নির্বাচন কমিশন গঠন হতে যাচ্ছে, তা নিয়ে বিএনপির অবস্থান কী- এমন প্রশ্নে খানিকটা বিরক্তিই প্রকাশ করলেন দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এগুলো বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। এ বিষয়ে আমরা কোনো চিন্তাও করি না। কারও প্রশ্নের উত্তর দিতেও রাজি নই।’

তবে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়াকে ‘তামাশা’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনগণকে একটা ধোঁকা দেয়ার পাঁয়তারা এটি। তো এগুলোয় আমরা কথা বলব কেন? এসব ব্যাপারে সময় নষ্ট করার আমাদের সময় নেই।’

দলটির মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এটা নিয়ে তো আমরা ক্লিয়ার করে দিয়েছি। তার পরও আপনারা কেন প্রশ্ন করছেন? যারা জোর করে ক্ষমতায় থাকে তারা কি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন দেবে?

‘আগামী নির্বাচন কমিশন হবে আরেকটা ভাঁওতাবাজি। দেখবেন আরেকজন হুদা (সাবেক সিইসি কে এম নুরুল হুদা) বের করে নিয়ে আসছে তারা।’

সার্চ কমিটির মাধ্যমে প্রথম নির্বাচন কমিশন গঠন হয় ২০১২ সালে। সিইসি হিসেবে দায়িত্ব পান কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ। এই কমিশনই ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করে।

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি ও তার জোট সেই নির্বাচন বর্জনের পাশাপাশি ভোট ঠেকাতে সহিংস আন্দোলনে নামে।

২০১৭ সালে কে এম নুরুল হুদাকে সিইসি করে নির্বাচন কমিশন গঠন করার আগে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ ও সার্চ কমিটিতে নাম দেয়ার প্রক্রিয়ায় অংশ নেয় বিএনপি।

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি পূরণ না হলেও হুদা এই কমিশনের অধীনে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে অংশও নেয় তারা। তবে ভোটের ফলাফল ছিল বিব্রতকর। কেবল সাতটি আসন পায় বিএনপির দুই জাট ২০ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

এই নির্বাচনের ফলাফল বিএনপি এখনও মেনে নেয় না। তাদের দাবি, ২৯ ডিসেম্বর রাতেই ভোট হয়ে গেছে।

কেবল জাতীয় নির্বাচন নয়, হুদা কমিশনের শেষ বছরে তাদের অধীনে কোনো ভোটেই আর অংশ নেয়নি বিএনপি।

এ বিভাগের আরো খবর