বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিশু ধর্ষণ ও আত্মহত্যা বেড়েছে: এমজেএফ

  •    
  • ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০১:১১

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এমজেএফ জানিয়েছে, ২০২১ সালে সারাদেশে ৮১৮টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ৯৪টি শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে। ২০২০ সালে শিশু ধর্ষণের এই সংখ্যা ছিল ৬২৬। এছাড়া গত এক বছরে দেশে আত্মহত্যা করেছে ৭৮টি শিশু। আগের বছর সংখ্যাটি ছিল ৩৪।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা এবং শিশুরা অনেকটা ঘরবন্দি পরও গত এক বছরে দেশে শিশু ধর্ষণ বেড়েছে ৩০ শতাংশ।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) জানিয়েছে, ২০২১ সালে সারাদেশে ৮১৮টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে এবং ৯৪টি শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে। ২০২০ সালে শিশু ধর্ষণের এই সংখ্যা ছিল ৬২৬।

মঙ্গলবার সকালে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশ শিশু পরিস্থিতি ২০২১’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি এসব তথ্য তুলে ধরেছে।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছে ১৪টি কন্যাশিশু। আর যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১১০টি শিশু।

শিশু ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে শিশুদের সার্বিক পরিস্থিতি সার্বিকভাবে উদ্বেগজনক বলেও জানিয়েছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন।

প্রথম আলো, যুগান্তর, সমকাল, ইত্তেফাক, কালের কণ্ঠ- পাঁচটি জাতীয় দৈনিক এবং ডেইলি স্টার, নিউ এজ ও ঢাকা ট্রিবিউন নিয়ে তিনটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত শিশু অধিকার বিষয়ক সংবাদ পর্যালোচনা করে এই তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত এক বছরে দেশে আত্মহত্যা করেছে ৭৮টি শিশু। তাদের মধ্যে ছেলে শিশু ৫৭ ও কন্যা শিশু ২১টি। ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল ৩৪ জন এবং আত্মহত্যার চেষ্টা করতে গিয়ে আহত হয়েছে ২৩ জন।

আত্মহত্যার কারণ হিসেবে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন চিহ্নিত করেছে পরীক্ষায় খারাপ ফল, পরিবারের ওপর রাগ, প্রেম, উত্যক্ত ও ধর্ষণ বা ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হওয়া, শ্লীলতাহানির বিচার না পাওয়া এবং সাইবার ক্রাইম ও ব্ল্যাকমেইলের শিকার হওয়াকে।

২০২১ সালে বিভিন্ন কারণে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে ১৮৩টি শিশু এবং হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে ১৩৫ শিশুকে। ২০২০ সালে হত্যার শিকার হয়েছিল ১৪৫টি শিশু।

অবশ্য সড়কে শিশু মৃত্যু কমেছে। গেল বছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ৬৯টি শিশু। ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৫৮।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন বলছে, ‘বাংলাদেশের শিশুরা তাদের ঘরেই নিরাপদ নয়। অধিকাংশ শিশু ধর্ষণ পারিবারিক পরিবেশে পরিচিতদের দ্বারাই সংঘটিত হয়েছে।’

প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে প্রতিষ্ঠানটি আরও জানিয়েছে, প্রতিবেশীদের হাতেও শিশুদের একটি বড় অংশ ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। ধর্ষণের শিকার হওয়া শিশুদের বয়স কোনো কোনো ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ২ বছর।

বলা হয়, খেলারত শিশুরা প্রলোভনে পড়ে পরিচিতদের মাধ্যমে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। কিশোরীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে প্রেমের ফাঁদে পড়ে। স্কুল ও মাদ্রাসা ছাত্রীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে শিক্ষকদের দ্বারা।

এসব পরিসংখ্যানের বাইরে নানামুখী নির্যাতনে আহত হয়েছে ২৫৪টি শিশু। হারিয়ে গেছে ৩৮টি শিশু। পানিতে ডুবে মারা যাওয়া শিশুর সংখ্যা ৫৭০।

২০২০ সালে পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৬৫। আর নিখোঁজ ও অপহরণের শিকার হয় ২২ শিশু।

অপহরণের কারণ হিসেবে অর্থ, প্রেম, বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, প্রতিশোধপরায়ণতা, পাচার ও মুক্তিপণ দাবির মতো বিষয়গুলো সংবাদে উঠে এসেছে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।

শিশুদের নিয়ে ২৫টি বিষয়ে নেতিবাচক খবর ছাপা হয়েছে ১ হাজার ৯৩০টি আর ১২টি বিষয়ে ছাপা হয়েছে ইতিবাচক সংবাদ। সংখ্যাটি ১০৬।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (শিশু ও সমন্বয় উইং) মুহিবুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহবুবা বিলকিস।

সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশ শিশু পরিস্থিতি ২০২১’-এর সার্বিক চিত্র উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির কো-অর্ডিনেটর রাফেজা শাহীন।

মুহিবুজ্জামান বলেন, ‘পত্রিকা থেকে প্রাপ্ত তথ্য হচ্ছে অপরাধপ্রবণতার ধারণামাত্র। ১৫টি পত্রিকা থেকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় তথ্য গ্রহণ করে। ১০৯ হটলাইন নম্বরে প্রতিদিন অসংখ্য ফোন আসে। সেখান থেকে আমরা অপরাধের একটা ড্যাটা বেইজ তৈরি করি।’

শাহীন আনাম বলেন, ‘আমাদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী শিশুরা নিজের বাসায়ও নিরাপদ নয়। শিশু ধর্ষণ ও শিশুর যৌন হয়রানি বন্ধ করতে এখনই জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। নয়তো এই হার বাড়তেই থাকবে।’

শিশু অধিকার রক্ষায় সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর