বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফেব্রুয়ারির শেষে খুলতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৩:২২

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন যেহেতু একটু খারাপ সময় যাচ্ছে, আমরা আশা করি এ মাসের শেষের দিকে হয়তো অবস্থার পরিবর্তন হবে। সে সময় আমরা স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার খুলে দিতে পারব।’

করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণের মাত্রা এ মাসের শেষের দিকে কমে আসবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবারও খুলে দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা জানান।অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম শুরু করি, কিন্তু ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন এক সংক্রমণ যেটাতে আবার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, আবার মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে, আবার আমাদের বন্ধ করে দিতে হলো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন যেহেতু একটু খারাপ সময় যাচ্ছে, আমরা আশা করি এ মাসের শেষের দিকে হয়তো অবস্থার পরিবর্তন হবে। সে সময় আমরা স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার খুলে দিতে পারব।’

করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নিতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘টিকা নেয়ার ব্যাপারে অনেকেরই অনীহা থাকে। আমি দেখি অনেকে নিতে চান না। এখন আমরা সর্বস্তরের মানুষ যাতে টিকা পায়, তার ব্যবস্থা নিয়েছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যাতে আমরা খুলতে পারি, সে জন্যই টিকা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

‘যারা এ পর্যন্ত টিকা নেননি তাদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে যে আপনার টিকাটা নিয়ে নেবেন। এই ভ্যাকসিনটা নিলে পরে করোনা আক্রান্ত হলেও এতটা খারাপ পর্যায়ে যাবে না।’

করোনাভাইরাসে দেশের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থী স্কুলে যাবে, কলেজে যাবে, ইউনিভার্সিটিতে যাবে, সুন্দর পরিবেশ থাকবে, তারা লেখপড়া শিখবে, বন্ধুদের সঙ্গে মিলবে, তাদের জীবনটা একটা সুন্দর জীবন হয়।’

অনলাইন ও টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষার ব্যবস্থা নেয়া হলেও সেটা যথেষ্ট মনে করছেন না সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘স্কুলে গিয়ে সুন্দর পরিবেশ বা কলেজ, ইউনিভার্সিটি গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে চলবে, সেই আনন্দটা থেকে তারা বঞ্চিত ছিল। যখনই আমরা করোনাকে একটু নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি, তখনই আমরা স্কুলগুলো চালু করেছিলাম, কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো যে আবার নতুন করে সংক্রমণটা দেখা দিল।’

‘অকৃতার্য হওয়া অপরাধ না’

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘যারা কৃতকার্য হয়েছে তাদের আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। যারা হতে পারেনি, আমি মনে করি যে একটা অস্বাভাবিক পরিবেশের মধ্যে পরীক্ষা হয়েছে। কাজেই এখানে শিক্ষার্থীদের কোনো দোষ নেই।

‘সে ক্ষেত্রে অভিভাবকদের বলব, এদের জন্য আপনারা সুযোগ করে দেবেন, তাদের আদর দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে। অকৃতকার্য হওয়া তাদের অপরাধ না। বিশ্বব্যাপী এ সমস্যাটা হচ্ছে।’

করোনাভাইরাসের মধ্যেও শিক্ষা কার্যক্রম চালু রেখে সীমিত পরিসরে হলেও পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তার ফলে আজকে রেজাল্ট আমরা দিতে পারছি। ৪৪ দিনের মধ্যে আপনারাই রেজাল্ট দিতে পারলেন। বোর্ড এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, এ কারণে আপনারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রেজাল্টটা দিতে পেরেছেন।’

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী করতে হবে শিক্ষার্থীদের

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, এখন প্রযুক্তির যুগ, কারিগরির যুগ। আমরা সেদিকে লক্ষ্য রেখে কারিগরি শিক্ষাকে সব থেকে গুরুত্ব দিচ্ছি। প্রতিটা উপজেলায় কারিগরি স্কুল যেমন করে দিচ্ছি, সেই সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে বিশ্ব পরিবর্তনশীল।

‘এখন যেমন চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আমাদের দোরগোড়ায়, আমাদের ছেলেমেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী, আমরা তাদের যদি উপযুক্ত শিক্ষা দিতে পারি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমাদের দেশ এবং বিশ্বব্যাপী সেই সুযোগটা আমাদের ছেলেমেয়েরা নিতে পারবে।’

উচ্চ শিক্ষায় সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গতানুগতিক ডিগ্রি নিলেই শুধু হবে না। স্বাভাবিকভাবে যে কোনো মানুষ পড়াশোনা করে আর্থিক সচ্ছলতার জন্য, কর্মসংস্থানের জন্য। কর্মসংস্থানের উপযুক্ত শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে, সেই শিক্ষা আমাদের দিতে হবে।’

বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণা বাড়াতে তাগিদ

বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণায় জোর দিতে সবার প্রতি আহ্বান রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটা বিষয় হচ্ছে গবেষণা। এই গবেষণার ওপর আমি সবসময় গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আজকে গবেষণা করেছি বলেই বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আজকে গবেষণার জন্য যে সমস্ত তরিতরকারি শুধু শীতকালেই পাওয়া যেত, এখন তা বারো মাসই পাওয়া যায়।’

কৃষিতে সাফল্য পেলেও বিজ্ঞান বা মেডিক্যাল সায়েন্সে দেশ পিছিয়ে আছে বলে মনে করেন শেখ হাসিনা। তার মতে, ‘আমাদের এখনও আরও জোর দিতে হবে। কারণ মেডিক্যাল গবেষণাটা খুবই প্রয়োজনীয়। ঘনবসতির দেশ আমাদের। সেখানে সবার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শিক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য এটা একান্তভাবে দরকার।’

কর্মসংস্থান বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও যুব সমাজকে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের যে যুবসমাজ, তারা শুধু চাকরিমুখী হবে না, নিজেরা নিজেদের কাজ করবে, নিজেরা উদ্যোক্তা হবে, তারা অন্যকে কাজ দেবে। সেভাবেই তাদের গড়ে উঠতে হবে, প্রশিক্ষিত হতে হবে। কাজেই আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবাবে মাথা উঁচু করে আমরা চলব, এটাই আমাদের লক্ষ্য।’

এ বিভাগের আরো খবর