করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত বছরের মতো এ বছরও আড়ম্বরহীনভাবে বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আরাধনা করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।
এবারও পূজা উপলক্ষে থাকবে না কোনো সাংস্কৃতিক আয়োজন বা সভা। বসবে না মেলা।
শনিবারের পূজা উপলক্ষে ঢাবির জগন্নাথ হলে চলছে মণ্ডপসজ্জার কাজ।
সনাতন ধর্ম অনুসারে, মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে সাদা রাজহাঁসে চেপে দেবী সরস্বতী জগতে আসেন।
প্রতি বছর জগন্নাথ হল মাঠে ৮০টির মতো মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হলেও গত বছরের মতো এ বছর মাত্র একটি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে পূজা।
এ ছাড়া প্রতি বছর চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা জগন্নাথ হলের পুকুরের মাঝখানে সাদা হাঁসের ওপর দেবী সরস্বতীকে বসিয়ে আরাধনা করলেও এবার করা হয়নি সেটি।
শুক্রবার বিকেলে জগন্নাথ হলের পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, বেদিতে বসানো হয়েছে বিদ্যার দেবী সরস্বতীকে। দেবীর রঙের কাজও শেষ। এখন চলছে মণ্ডপসজ্জার কাজ।
প্রতি বছরের মতো এবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা মণ্ডপ সাজাচ্ছেন। তাদের কেউ কাটছেন ককশিট আবার কেউ ককশিটে আঁকছেন। কেউ আবার করছেন রং।
জগন্নাথ হলের পূজামণ্ডপে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। ছবি: নিউজবাংলা
মণ্ডপ সাজানোর কাজে ব্যস্ত চারুকলা অনুষদের ওরিয়েন্টাল আর্টের শিক্ষার্থী প্রতিম রায় পার্থ বলেন, ‘আমাদের কাজ মঞ্চ বানিয়ে দেয়া। আট দিন ধরে আমরা কাজ করছি। এতদিন মূলত ককশিট কেটে, এঁকে ডিজাইন করেছি। এখন এসব ডিজাইনে রং করে সেটআপ করা হবে। আশা করি রাতের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে।’
প্রস্তুতির বিষয়ে পূজা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ফ্রেঞ্চ ল্যাংগুয়েজ অ্যান্ড কালচার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বিপুল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। আলোকসজ্জার কাজ শেষ। প্রতিমার কাজও প্রায় শেষ। এখন মণ্ডপের সাজসজ্জার কাজ হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘মণ্ডপের কাজটা প্রতি বছরই চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরাই করেন। মঞ্চ-মণ্ডপ সাজানোর জন্য চারুকলা অনুষদের শিক্ষকদের নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। তারা কয়েকজন শিক্ষার্থীকে এ দায়িত্ব দেন। কীভাবে মণ্ডপটা সাজানো হবে সে জন্য ওরা কয়েকটা ডিজাইন করে আনে। এদের মধ্যে একটাকে আমরা চূড়ান্ত করি। এখন তারা সেটি নিয়েই কাজ করছে। রাত ১০-১১টার মধ্যে আমাদের কাজ শেষ হয়ে যাবে আশা করি।’
বিপুল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘আগামীকাল সকাল ৯টা থেকে পূজা শুরু হবে। সাড়ে ৯টা থেকে দেয়া হবে অঞ্জলি। একটা মণ্ডপ হওয়ায় পূজায় অনেকেই আসবে। যতক্ষণ তারা অঞ্জলি দিতে চাইবে, ততক্ষণ আমাদের কার্যক্রম চলবে।
‘আমাদের এখানে একসঙ্গে প্রায় ২০০ জন অঞ্জলি দিতে পারবে। সে রকমই প্রস্তুতি রয়েছে। তবে এবার যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ আর সরকারি বিধিনিষেধও আছে তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে করছি।’