দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ছুটির মেয়াদ আরও দুই সপ্তাহ বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সশরীরে পাঠদান বন্ধ থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
বুধবার বিকেলে এক ভিডিও বার্তায় এ তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
তিনি বলেন, ‘সারা দেশে করোনা সংক্রমণের হার এখন ৩০ শতাংশের কাছাকাছি। এ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরার্মশক্রমে সরকার নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান আপাতত বন্ধ থাকার সময়সীমা ৬ ফেব্রুয়ারির পর আরও দুই সপ্তাহ বৃদ্ধি করা হবে।’
খুব শিগগিরই শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পরিবেশে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন শিক্ষামন্ত্রী।
ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আশা করি আমরা সবাই স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলবো। এবং এর মধ্য দিয়ে দেশে করোনা সংক্রমণের হার কমে আসবে। খুব শিগগিরই আমাদের শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পরিবেশে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের জায়গায় আমরা নিয়ে যেতে পারব।’
দেশে গত কয়েক দিনেই দৈনিক করোনা শনাক্ত ১৩ হাজারের ওপর থাকছে। করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাও টানা চারদিন ধরে ৩০-এর উপরে রয়েছে। সবশেষ বুধবার সকাল পর্যন্ত পূববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া নিয়ে পরামর্শক কমিটি ও সরকার দ্বিধায় রয়েছে।
ওদিকে অবস্থা যেমনই হোক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ। সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে ইউনিসেফের আহ্বানকেও গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। অবশ্য এ জন্য শিক্ষার্থীদের টিকাদান নিশ্চিত করতে চায় সরকার।
গত বছরের ১ নভেম্বর পাঠদান কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দেয়া শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের দেয়া হচ্ছে ফাইজারের টিকা।
রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
করোনা সংক্রমণ রোধে ১৩ জানুয়ারি থেকে ১১ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। ২১ জানুয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধসহ নতুন করে পাঁচ দফা নির্দেশনা আরোপ করে মন্ত্রিপিরষদ বিভাগ। তাতে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে দেড় বছর পর ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হয় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও চালু করা হয়।