বিএনপি বড় জোট গঠন করে সরকার পতনের আন্দোলনে নামার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাকে পাত্তা দিচ্ছেন না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সমন্বিত হল সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
নানক বলেন, ‘বিএনপির তরফ থেকে এখন বলা হচ্ছে, এক দফাভিত্তিক বড় জোট গঠন হবে। তারা কাদের ভয় দেখায়, যারা আইয়ুব-ইয়াহিয়া খানকে মোকাবিলা করেছে তাদের? ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। জনগণের শক্তিই শেখ হাসিনার শক্তি। জনগণের শক্তি দিয়ে এসব মোকাবিলা করা হবে।’
২০১৩ সালে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে এবং ২০১৫ সালে সরকার পতনের আন্দোলনে নেমে খালি হাতে ঘরে ফেরা বিএনপি ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই ভোটে আসে।
তবে নির্দলীয় সরকারের ও জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে ফিরে গিয়ে বিএনপি এবার নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপ বর্জন করেছে। এর মধ্যে দলটির স্থায়ী কমিটি জোট সম্প্রসারণ করে এক দফা আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
বিএনপির উদ্দেশে নানক বলেন, ‘যখন তারা রাস্তা দিয়ে যায় তখন দেখে উন্নয়ন, যখন ঢাকার বাইরে যায় তখনও দেখে উন্নয়ন। এসব তাদের ভালো লাগে না। ওদের ভালো লাগে না রোগে পেয়েছে। এই রোগের ওষুধ আমাদের কাছে নেই। ওষুধ আছে জনগণের কাছে। আগামী নির্বাচনে জনগণ সে ওষুধ ব্যবহার করবে।’
দেশে বিরোধী দল করতে হলেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হতে হবে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ নেতা।
ছাত্রলীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকে যারা বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছিল তারা আবার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আপনাদের প্রস্তুত হতে হবে। ষড়যন্ত্রের বিষদাঁত ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখা ছাত্রলীগে পদপ্রত্যাশীদের উদ্দেশে নানক বলেন, ‘হলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে শিক্ষার্থীদের সুখ-দুঃখের সাথি হতে হবে। তাদের বাড়িতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে হবে।’
রোববার ছয় বছরের মাথায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের হল সম্মেলন হয়েছে। ২০১৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর শেষ সম্মেলন হয়েছিল।
দুপুর ১২টায় শুরু হয় সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা। এক মিনিট নীরবতা, জাতীয় সংগীত গেয়ে জাতীয় ও ছাত্রলীগের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি যেতে পারেননি।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রনক জাহান রাইন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন রহমান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
সম্মেলনের শুরুতে বক্তব্য দেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগ সভাপতি বরিকুল ইসলাম বাঁধন। ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সম্মেলন উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এ বি এম মোজাম্মেল হক, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।
সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে পাঁচ বছর আগের হল কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত।