বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ধাক্কা কাটিয়ে উত্থানে ফিরে এক মাসের সর্বোচ্চ সূচক

  •    
  • ১০ জানুয়ারি, ২০২২ ১৫:১৩

দিন শেষে ডিএসইএক্সের অবস্থান ৭ হাজার পয়েন্ট ছুঁইছুঁই হয়ে ৬ হাজার ৯৯৪ পয়েন্টে দিয়ে লেনদেন শেষ করে। সূচকের এই অবস্থান গত ৭ ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ। সেদিন সূচকের অবস্থান ছিল ৭ হাজার ৪৮ পয়েন্ট।

টানা ছয় দিন সূচক বাড়ার পর এক দিনের ধাক্কা শেষে আবার উত্থানে ফিরল পুঁজিবাজার। আগের দিন সূচক যতটা কমেছিল, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেন।

সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৬১ পয়েন্ট। আগের দিন পড়েছিল ৫৪ পয়েন্ট।

বেড়েছে ১৭৮টি কোম্পানির দর, কমেছে ১৫৪টির, অপরিবর্তিত ছিল ৪১টির।

আগের দিন বেড়েছিল ৯৮টি কোম্পানির দর, কমেছিল ২৫৪টির, অপরিবর্তিত ছিল ৩২টির দর।

গত সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দর সংশোধনে থাকা পুঁজিবাজারে বছর শেষে ডিসেম্বরে পতন হয় আরও বেশি। তবে বছরের শেষ সপ্তাহের শেষ ভাগে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয় পুঁজিবাজার।

গত বছরের শেষ কর্মদিবস আর নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহের পাঁচ কর্মদিবস মিলিয়ে টানা ছয় দিন সূচক বাড়ার সুখস্মৃতি নিয়ে নতুন সপ্তাহ শুরু করে পুঁজিবাজার।

সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার শুরুতে সূচক বাড়লেও শেষ আড়াই ঘণ্টায় হোঁচট খায় পুঁজিবাজার। এই সময়ে ৮০ পয়েন্ট পতনের পর করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ার কারণে সম্ভাব্য বিধিনিষেধ নিয়ে আতঙ্কের বিষয়টি আলোচনা হয়।

সোমবার লেনদেনের শুরুর পর ২ ঘণ্টায় সূচক ওঠানামা করলেও আগের দিনের বিপরীতে গিয়ে শেষ আড়াই ঘণ্টায় টানা উত্থান হয়।

দিন শেষে ডিএসইএক্সের অবস্থান ৭ হাজার পয়েন্ট ছুঁইছুঁই হয়ে ৬ হাজার ৯৯৪ পয়েন্টে দিয়ে লেনদেন শেষ করে। সূচকের এই অবস্থান গত ৭ ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ। সেদিন সূচকের অবস্থান ছিল ৭ হাজার ৪৮ পয়েন্ট।

দর বৃদ্ধিতে সবেচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিল বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানিগুলো। ৮৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে সোমবার।

এ ছাড়া প্রকৌশল খাতের ৭৯ শতাংশ শেয়ারের দর বৃদ্ধি এ খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়িয়েছে।

আগের দিন সূচক যতটা কমেছিল, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে সোমবার

ব্যাংক খাতের শেয়ারের ৫০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে, বেড়েছে ৩৫ শতাংশ। বাকি কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর ছিল আগের দিনের মতো।

বস্ত্র খাতেরও একই অবস্থা ছিল। লেনদেনে এই খাতের ৪৩ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। বেড়েছে ৪১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর।

বিমা খাতের মধ্যে জীবন বিমা খাতের শেয়ারগুলোর উত্থান ছিল বেশি। সে তুলনায় সাধারণ বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বেড়েছে কম।

সোমবার জীবন বিমা খাতের ৭০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। আর ৩০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। সাধারণ বিমা খাতের ৩০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। ৬৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে।

সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। বেশ কয়েক মাস পর এই চিত্র দেখা গেল। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বিমা খাত। তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে ছিল যথাক্রমে বিবিধ ও প্রকৌশল।

এর পরের অবস্থানগুলো যথাক্রমে ওষুধ ও রসায়ন, ব্যাংক, বস্ত্র, আর্থিক, খাদ্য ও টেলিযোগাযোগ খাত।

সূচক বাড়িয়েছে যেসব কোম্পানি

এদিন সূচক বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে দুটি কোম্পানি, এর একটি আইসিবি অপরটি রবি। আইসিবির শেয়ার দর বেড়েছে ৫.২৮ শতাংশ, এতে সূচক বেড়েছে ৮.৪৯ পয়েন্ট। রবির শেয়ার দর বেড়েছে ২.৭ শতাংশ, এতে সূচক বেড়েছে ৮.২৪ পয়েন্ট।

সূচক বৃদ্ধিতে শীর্ষে থাকা দশ কোম্পানির মধ্যে বাকি আটটি কোম্পানির অবদান ছিল ৩২ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট।

সূচক যতটা বেড়েছে, তার সিংহভাগেই বাড়িয়েছে এই ১০টি কোম্পানি

এরমধ্যে পাওয়ারগ্রিডের দর নয় শতাংশের বেশি বাড়ায় সূচক বৃদ্ধিতে অবদান ছিল ৭.৪ পয়েন্ট। তিতাস গ্যাসের দর একই হারে বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৬.২২ পয়েন্ট।

বেক্সিমকো লিমিটেডের দর বেড়েছে ২.৯২ শতাংশ। এতে সূচক বেড়েছে ৫.৯২ পয়েন্ট। বেক্সিমকো ফার্মার দর ২.৩৩ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৩.১৬ পয়েন্ট।

লাজার্ফ হোলসিমের দর ২.০৯ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৩.১ পয়েন্ট। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের সূচক বৃদ্ধিতে অবদান ছিল ২.৫২ পয়েন্ট, জিএইচপি ইস্পাতের ২.২৭ পয়েন্ট আর বিএসআরএম লিমিটেডের ২.২৫ পয়েন্ট।

সব মিলিয়ে ১০টি কোম্পানির কারণেই সূচকে যোগ হয়েছে ৪৯ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট।

অন্যদিকে সূচক সবচেয়ে বেশি ৩.১০ পয়েন্ট কমেছে ওয়ালটনের দর ০.৫৭ শতাংশ কমার কারণে।

ইউনাইটেড পাওয়ার, গ্রামীণ ফোন, বার্জার পেইন্টস, সিটি ব্যাংক, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী পেপারস, ডেল্টা লাইফ ডাচ বাংলা ব্যাংক ও এসআইবিএল সূচক কমিয়েছে কিছুটা।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ১২.৮১ পয়েন্ট।

এই ১০টি কোম্পানি সূচক নিচের দিকে টেনে নামিয়েছে

দর বৃদ্ধিতে ১০ কোম্পানি

এদিন দিনের সর্বোচ্চ দরে লেনদেন হয়েছে ১১টি কোম্পানি, যার প্রতিটির শেয়ার দর বেড়েছে নয় শতাংশের বেশি।

এর মধ্যে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির দর ৮২ টাকা থেকে ১০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৯০ টাকা ২০ পয়সা। জীবন বিমা খাতের এই কোম্পানিটির ৬ কোটি ৮১ লাখ টাকার ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৪০২টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

৯.৯৮ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে আরেক জীবন বিমা কোম্পানি ফারইস্ট লাইফ ইন্সুরেন্সের। একই হারে আরও দুটি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। এর একটি রংপুর ফাউন্ড্রি অপরটি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।

৯.৯৫ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে তথ্য প্রযুক্তি খাতের ইনফরমেশন সার্ভিসেস কোম্পানির। ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার ৪ লাখ ৪২ হাজার ২৮৭টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

বসুন্ধরা পেপার মিলের দর টানা তিন দিন সর্বোচ্চ পরিমাণ বেড়েছে। এই কোম্পানিটির দর ৯.৯৪ শতাংশ, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৯.৮৯ শতাংশ, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের দর ৯.৮৯ শতাংশ আর একমি পেস্টিসাইডসের দর ৯.৮৩ শতাংশ এবং পাওয়ার গ্রিড ও তিতাস গ্যাসের দর বেড়েছে ৯.৭৩ শতাংশ।

এই ৬টি খাতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে সোমবার

আরও ৩টি করে কোম্পানির দর যথাক্রমে ৮ ও ৭ শতাংশ, ৫টি কোম্পানির দর ৬ শতাংশের বেশি, ৬টি কোম্পানির দর ৫ শতাংশ, ১৩টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ৮টির দর ৩ শতাংশের বেশি, ৩৯টির দর ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

দর পতনের ১০ কোম্পানি

সবচেয়ে বেশি ৬.১২ শতাংশ শেয়ার দর হারিয়েছে ঢাকা ডাইংয়ের। কোম্পানিটির শেয়ারদর ২৪ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ২৩ টাকা।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা আফতাব অটোর দর কমেছে ৫.৫৫ শতাংশ। এছাড়া লাভেলো আইসক্রিমের দর ৪.৯৭ শতাংশ আর কেডিএস এক্সেসরিজের দর ৪.৯২ শতাংশ কমেছে।

এছাড়া সোনালী পেপারের দর ৩.৫০ শতাংশ, এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ ফান্ডের দর ৩.১৫ শতাংশ আর স্যোশাল ইসলামী ব্যাংকের ৩.১৪ শতাংশ।

এদিন দুই শতাংশের বেশি শেয়ার দর কমেছে ১৩টি কোম্পানির।

প্রধান বেশিরভাগ খাতেই লেনদেনের পাশাপাশি বেড়েছে শেয়ারদর

লেনদেনে সেরা ১০

সোমবার টাকার অংকে সবেচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে পাওয়ার গ্রিডের; ১০১ কোটি ২ লাখ টাকায় হাতবদল হয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ ৮০ হাজার ৮৯৪টি শেয়ার।

বেক্সিমকো লিমিটেডের ৯৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৬৩ লাখ ৫৬ হাজার ২৭৭টি।

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৬৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির ৫৬ কোটি ২২ লাখ টাকা, ফরচুন সুজেরর ৫১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

এছাড়া লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের ৬২ লাখ ৬ হাজার ৭৮৯টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে, যার বাজারমূল্য ছিল ৫০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।

ডেল্টা লাইফের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৬ কোটি ১০ লাখ টাকার, তিতাস গ্যাসের ৪০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, জিপিএইচ ইস্পাতের ৩১ কোটি ৪০ টাকা টাকার।

সাইফ পাওয়ারের ২৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের ২১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর