রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে সব দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক দলের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী রাখার যে শর্ত আছে, সেটি ইচ্ছাধীন করার প্রস্তাব করেছেন তারা।
চেয়ারম্যান মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে যান। সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মহিউদ্দিন।
তিনি জানান, তারা ৭টি প্রস্তাব দিয়েছেন। এর মধ্যে আছে উপরোক্ত দুটি।
২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত নির্বাচন কমিশনের সময় রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালুর সময় সব কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখার শর্ত দেয়া হয়। এ জন্য সময় বেঁধে দেয়া হয় ২০২০ সাল পর্যন্ত। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কোনো দলই সেই শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এই অবস্থায় এই বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ হয়নি।
খেলাফত আন্দোলন বলছে, সব কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী রাখার যে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে, তা অনেক নারীদের ক্ষেত্রে জোরপূর্বক রাজনীতিতে আসার এক নির্দেশনা যা ইসলামি দলগুলোর পক্ষে বাস্তবায়ন করা কঠিন।
আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ বলেন, ‘এটা বাধ্যবাধক না করে ঐচ্ছিক করার ব্যাপারে সুপারিশ করেছি।’
দলটির অন্য যেসব প্রস্তাব
সব দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে একটি স্থায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন।
সেই কমিশন সৎ নিষ্ঠাবান, নির্দলীয় ব্যক্তিদের দিয়ে গঠন, নবীন প্রবীণের সমন্বয়ে ও নিরপেক্ষ করা, ‘ধর্মবিদ্বেষী’, চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, কালোটাকার মালিক, অবৈধ সম্পত্তি বৈধকারী, খুনি-সন্ত্রাসী, সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী, ঋণখেলাপি মাদকাসক্তদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, এমনকি নির্বাচনে পাস করার পরেও স্বাস্থ্য পরীক্ষায় মাদক গ্রহণের প্রমাণ পেলে সংসদ সদস্য পদ বাতিলের প্রস্তাবও করে দলটি।
আমাদের কথা মনোযোগ সহকারে শুনেছেন। তিনি বলেছেন আপনাদের দাবীগুলো সুন্দর। বিশেষ করে তিনি নবীণ ও প্রবীণের সম্মিলনে নির্বাচন কমিশন গঠনে আমাদের প্রস্তাবটার খুব প্রসংশা করেছেন। এই দলটি সার্চ কমিটির বিষয়ে কারও নাম প্রস্তাব করেনি।
গণতন্ত্রী পার্টির প্রস্তাব
এই দলটি নির্বাচন কমিশন আইন করার দাবি তুলে ধরেছে। সংবিধানে এই ধরনের একটি আইন করার কথা থাকলেও স্বাধীনতার পর কোনো সরকার সে আইন করেনি।
সংলাপে গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি আরশ আলী ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গণভবনে যায়।
দলটির নেতারা জানান, সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে আইনের কথা বলে আছে সেই আইন অনুযায়ী একটি বিধি-বিধান তৈরি করার জন্য তারা প্রস্তাব করেছেন।
যদি সেটা করা না যায়, তাহলে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে নিয়ে একটি বিশেষ কাউন্সিল গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
দলটি বলে, সার্চ কমিটি ৫ টি করে নাম প্রস্তাব করবে কাউন্সিলের কাছে। সেই কাউন্সিল নাম সংক্ষেপ করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেবেন।