নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ থেকে বেরিয়ে দলের ভাঙন নিয়ে প্রশ্নে গণফোরামের একাশের নেতা মোকাব্বির খান বললেন, ‘দলের অন্য অংশ মন্টুপন্থিরা দলের কেউ না।’
তার এমন মন্তব্যের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দলের অন্য অংশের সভাপতি মোস্তাফা মহসিন মন্টু কিছু বলতে রাজি হননি। শুধু বলেছেন, ‘এই বিষয়ে এখনই কিছু বলবো না।’
রোববার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বসেন গণফোরামের আট নেতা। তবে দলের সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা ড. কামাল হোসেন এই প্রতিনিধি দলের হয়ে সংলাপে যাননি।
দলের একাংশের নির্বাহী সভাপতি মোকাব্বির খানের নেতৃত্বে আট সদস্যের প্রতিনিধি সংলাপে যান। এই প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিক উল্লাহ, সদস্য মোশতাক আহমেদ, হারুনুর রশিদ তালুকদার, সুরাইয়া বেগম, সেলিম আকবর, আব্দুর রহমান জাহাঙ্গীর ও শাহ নুরুজ্জামান।
সংলাপ থেকে বের হওয়া মোকাব্বির খানের কাছে সাংবাদিকরা, গণফোরাম কয়টি তা জানতে চান। জবাবে তিনি বলেন, ‘সেটাতো (মন্টু) গণফোরাম হিসেবে গ্রহণযোগ্য না। দল থেকে বের হয়ে কিছু একটা করলেই গণফোরাম হয় না।’
মোকাব্বির খান বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি, আপনারা জানেন আমরা নিবন্ধিত দল। জাতীয় সংসদেও গণফোরামের প্রতিনিধিত্ব আমি নিজেই করছি। আমাদের গণফোরামের অফিস আছে। আমরা আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে এসেছি।’
ড. কামাল হোসেন কেন আসেননি- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘উনি তো অসুস্থ।’
সংলাপে আসার বিষয়ে ড. কামালের সম্মতি আছে কি না- জানতে চাইলে মোকাব্বির খান বলেন, ‘স্যার বলেছেন যেটা.... উনি তো কোনো কিছু আমাদের ওপরে চাপিয়ে দেন নাই। উনি কখনই এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন না। উনি বলেছেন, গণফোরাম এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে সংলাপে আসার আগে বর্ধিত সভা করেছি।’
সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠিত হলে আপনারা নির্বাচনে যাবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এককভাবে সেটা বলতে পারিনা। আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব।’
সংলাপে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব করেছেন জানিয়ে মোকাব্বির খান বলেন, ‘আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে বলেছি, যেভাবে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। আমরা বলেছি, যখনই আইনি প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়, সেই নির্বাচন কমিশন জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দাবি করেছি, আমাদের যে সংবিধান আছে, সেই সংবিধানে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, সংবিধানের আলোকে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হোক। অতীতে যেভাবে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন করা হয়েছে সেটা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না।’
রাষ্ট্রপতি কি বলেছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উনি আমাদের দাবি নিয়ে উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন। বলেছেন, নির্বাচন কমিশন আইন অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল।’
সম্প্রতি ড. কামালের নেতৃত্বাধীন দলটিতে ভাঙন দেখা গিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টুকে সভাপতি ঘোষণা করে আরেকটি কমিটি গঠন হয়েছে।
দলের ভাঙন রোধে দুই অংশকেই ঐক্যবদ্ধ হতে চিঠি দিয়েছেন ড. কামাল হোসেন। মোকাব্বির খান যে কমিটিতে আছেন, তাতে সভাপতি হিসেবে আছেন ড. কামাল।