নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠার পর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চিঠি দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এক প্রার্থী।
বিরুলিয়া ইউনিয়নের নৌকা প্রতীক পাওয়া সাইদুর রহমান সুজনের এই ক্ষমার আবেদন গ্রহণ করেছেন নির্বাচনি কর্মকর্তা। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে যেন কোনো অভিযোগ না আসে, সেই বিষয়ে তাকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন ধরেননি, এসএমএস করলেও জবাব দেননি।
বৃহস্পতিবার বিরুলিয়া ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাইদুর রহমান সুজনের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের সংবাদ আসে গণমাধ্যমে।
সেদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মিরপুর-বিরুলিয়া সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে অন্তত ২০০ মোটরসাইকেল, ২০ থেকে ৩০টি প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস, দুটি পিকআপ ভ্যান ও অন্তত ৩০টি অটোরিকশা নিয়ে প্রচার চালান। তবে নির্বাচনি আচরণবিধিতে এই ধরনের শোডাউন নিষিদ্ধ আছে।
সারা দিন আচরণবিধি ভেঙে ব্যান্ড পার্টি দিয়েও প্রচার চালান নৌকার প্রার্থী। পরে বিরুলিয়ার কাকাবো গ্রামে তার বাড়িতে প্রায় দুই হাজার মানুষের ভূরিভোজেরও আয়োজন করেন।
এই ইউনিয়নে নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী আছেন ছয়জন। এদের মধ্যে একজন জাতীয় পার্টির, একজন ইসলামী আন্দোলনের এবং চারজন স্বতন্ত্র।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মহসিন মণ্ডল নিউজবাংলাকে বলেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী যদি এভাবে শোডাউন করেন, তাহলে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হবে।
এরপর বিরুলিয়া ও বনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. রাকিবুজ্জামান বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বক্তব্য জানতে চান। তাকে শনিবারের মধ্যে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচনি কর্মকর্তার কাছে লিখিত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সুজন। তিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে ক্ষমা চান বলে জানিয়েছে রিটার্নিং কর্মকর্তা রাকিবুজ্জামান।
নিউজবাংলাকে এই নির্বাচনি কর্মকর্তা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ ওঠে বিরুলিয়া ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় তার কাছে শোকজপত্র পাঠানো হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সশরীরে এসে তাকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছিল। আজ শনিবার দুপুরে তিনি এসে লিখিত জমা দিয়েছেন।’
লিখিত জবাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কী বলেছেন- এই প্রশ্নে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘মূলত নোটিশে তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। প্রথমবারের মতো এ ঘটনাটি ঘটেছে, বিষয়টি বিবেচনায় তাকে ক্ষমা করা হয়েছে। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, পরে আচরণবিধি লঙ্ঘনের পুনরাবৃত্তি হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নেব। সবার ক্ষেত্রেই জিরো টলারেন্স নীতি বজায় রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থীর আবেদনের পর তাকে ক্ষমা করে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী মহসিন মণ্ডল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তা বুঝেশুনেই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমরা শুধু সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।’
আগামী ৫ জানুয়ারি সাভার উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ভোট হবে।