ভোট নৌকা বাদে কোথাও যাবে না। হরিপুর বসবাস করতে হলে ভোট নৌকাতেই দিতে হবে।
কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের এভাবেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিলন মণ্ডল।
দেশে পঞ্চম ধাপে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভোট হবে ৫ জানুয়ারি। এর মধ্যে হরিপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী এম সম্পা মাহমুদের পক্ষে মঙ্গলবার রাতে বক্তব্য দিতে গিয়ে এ হুমকি দেন মিলন।
তার সেই বক্তব্যের ৩ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে মিলন মণ্ডলকে বলতে শোনা যায়, ‘আগ বাড়িয়ে কোনো রকম রং কিংবা সিঁদুর নিতে যায়েন না। আপনাদের কেউই রক্ষা করতে পারবে না। সবার তালিকা করা হচ্ছে। ৫ তারিখে নির্বাচনের পরে আমাদের কাছ থেকে আর কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নৌকা নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে আসবেন না। আওয়ামী লীগের রক্তের সঙ্গে কেউ বেইমানি করবেন না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো রকম বেয়াদবি সহ্য করা হবে না।
‘আমি মনে করি, আপনাদের দাঁড়ানো (ভোটে) ঠিক হয় নাই। আপনারা যারা হরিপুরে বসবাস করছেন, নৌকার বিরোধিতা করছেন, শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন, এটাই আপনাদের বড় ভাগ্যের বিষয়।’
নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে থাকা সবার তালিকা করা হচ্ছে এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ইউনিয়নবাসীকে পরিষ্কারভাবে বলতে চাই- ৫ তারিখে নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ সরকার কিন্তু শেষ হবে না। আমরা কিন্তু প্রত্যেক মানুষকে চিহ্নিত করব।
‘এমনও হতে পারে সরকারের যে উন্নয়ন হয়েছে আপনাদের ভোগ করতে দিব না। আপনারা নৌকার বাইরে যায়েন না। আপনাদের কেউ রক্ষা করতে পারবে না। আপনাদের বিপদে কেউ পাশে দাঁড়াতে পারবে না।’
এ বিষয়ে কথা বলতে আওয়ামী লীগ নেতা মিলন মণ্ডলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। সরাসরি যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
হরিপুর ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হাসান আলী জানান, ভোট সাধারণ নাগরিকদের অধিকার। নির্বাচনি প্রচারে এ ধরনের বক্তব্য ভোটারদের প্রভাবিত করে। নির্বাচনের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
কুষ্টিয়ার সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম টুকু বলেন, ‘নির্বাচন আনন্দমুখর পরিবেশে হওয়ার কথা। যাকে মানুষ পছন্দ করবে তিনিই নির্বাচিত হবেন। কিন্তু ইদানীং নির্বাচন এলেই সহিংসতা হচ্ছে। ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এগুলো কাম্য নয়। এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে কঠোর হতে হবে।’
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান দাবি করেন, নির্বাচন নিয়ে কেউ জল ঘোলা করতে পারবে না। সব সহিংসতা প্রতিহত করা হবে। কেউ পরিবেশ নষ্ট করলে জেলা পুলিশ শক্ত পদক্ষেপ নেবে।