মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) হার কমিয়ে আওতা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ভ্যাট বার অ্যাসোসিয়েশন।
ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ-২০২১ উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বুধবার এ সুপারিশ করেন অ্যাসোসিয়েশন নেতারা।
বক্তারা বলেন, সেবা খাতে বিপুল ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। তা বন্ধ করতে পারলে আদায় বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ হবে। ভ্যাট ফাঁকি বন্ধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আধুনিক প্রযুক্তির ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বসানোর উদ্যোগ নিলেও, এর কার্যক্রমে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
দ্রুত ইএফডি বসানোর কাজ শেষ করার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, এতে ভ্যাট ফাঁকির সুযোগ কমবে। স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত হবে ভ্যাট বিভাগে।
ইএফডি হচ্ছে এক ধরনের আধুনিক হিসাবযন্ত্র। এর মাধ্যমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত লেনদেনের তথ্য জানা যায়।
এনবিআর এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৬০০ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি বসিয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে আরও দশ হাজার মেশিন বসানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে রাজস্ব বোর্ড।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনবিআরের সাবেক সদস্য আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী বলেন, ‘ইএফডি ব্যবস্থায় ক্রেতা কিছু কিনলে সেই তথ্য সঙ্গে সঙ্গে রাজস্ব বোর্ডের কেন্দ্রীয় সার্ভারে চলে যায়। এর ফলে ভ্যাট ফাঁকির সুযোগ থাকে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভ্যাট আইনের কিছু সংশোধন হওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠানের এই আইন সম্পর্কে ধারণা নেই। তাই ইচ্ছাকৃত হোক কিংবা অনিচ্ছাকৃতভাবে, ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছেন তারা। এসব ধরা পড়ে অডিটে।’
রাজস্ব বোর্ডের সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশে ভ্যাট হার বেশি। এই কারণে ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা থাকে।
‘ভ্যাটের হার কমিয়ে আওতা বাড়াতে হবে। অনেক খাত আছে যেখান থেকে নামমাত্র ভ্যাট আদায় হয়। অথচ এসব খাত থেকে আরও ভ্যাট আদায়ের সুযোগ আছে।’
জরিমানার হার বাড়ানোর পক্ষে অবস্থান জানিয়ে আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী বলেন, ‘পাঁচ কিংবা দশ বছর পরে তা বাড়ানো যেতে পারে। তখন সবাই আইনটা বুঝে যাবে। আইনের প্রয়োগটাও বুঝবে।’
ভ্যাট পরামর্শদাতাদের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ ভ্যাট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. মো. নূরুল আজহার বলেন, ‘নতুন ভ্যাট আইনের বিষয়ে এখনও অনেক অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করেন, কিন্তু আইন সম্পর্কে ধারণা কম। তাই ভুল করেন। এ আইন সম্পর্কে সচেতনা বাড়াতে এনবিআরকে উদ্যোগ নিতে হবে।’
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমান, নির্বাহী সদস্য এম. নুরুল আলমসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা।