‘ঢাকা নগর পরিবহন’ নামে শুরু হতে যাওয়া বাস রুট রেশনালাইজেশনের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে ২৬ ডিসেম্বর। ঘাটারচর থেকে মতিঝিল হয়ে কাঁচপুর পর্যন্ত প্রথম পরীক্ষামূলক রুটে আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ১৫৭টি বাস পরিচালনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর পর্যন্ত প্রায় ২১ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রস্তাবিত এ রুটে গত ১ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষামূলক বাস চলাচল শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস মালিকদের পক্ষ থেকে আশাব্যঞ্জক সাড়া না মেলায় তিন দফা ঘোষণা দিয়েও তা চালু করা যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করে। ঘোষিত সময়ে চালু পরিবহন না হওয়ার কারণ উল্লেখ করে দুই সিটির মেয়র বাস মালিকদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে তারা ২৬ ডিসেম্বর ঢাকা নগর পরিবহন চালুর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এরই অংশ হিসেবে এবার আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পরীক্ষামূলক রুটে বাস পরিচালনার আগ্রহ প্রকাশ করে বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নে দায়িত্ব পালনকারী ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অফিসে আগ্রহপত্র জমা দিয়েছে।
রোববার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আগ্রহ প্রকাশকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আমরা ১৯তম সভায় ১২ ডিসেম্বর সময়সীমা নির্ধারণ করে বেসরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রমে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছিলাম। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আগ্রহপত্র জমা দিয়েছে। বিষয়টি ইতিবাচক এবং উৎসাহব্যঞ্জক। এসব আগ্রহপত্র যাচাই-বাছাই শেষে আমরা এই রুটে প্রয়োজনীয় বাসের অনুমোদন দেব।’
আগ্রহপত্র জমা দেয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ট্রান্স সিলভা ৩৮টি, ইকবাল এন্টারপ্রাইজ ২টি, এমএল লাভলি পরিবহন ৪টি, রজনীগন্ধা পরিবহন ১টি, মোস্তফা হেলাল কবির ৬টি, মোহাম্মদ ওলিউল্লাহ ১টি, জাহান এন্টারপ্রাইজ ১০০টি এবং এইচ আর ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি ৫টি বাস পরিচালনার আগ্রহ দেখিয়েছে।
ঢাকা ও এর আশপাশে দুই শতাধিক রুটে বাস চলাচল করে। এসব বাসের মালিকের সংখ্যা দুই হাজারেরও বেশি। ফলে কার বাসে কত বেশি যাত্রী নেয়া যায় সে প্রতিযোগিতা চলে রাস্তায়। এতে প্রায়শ দুর্ঘটনা ঘটছে।
এ অবস্থা থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দিতে ২০০৪ সালে ২০ বছরের পরিবহন পরিকল্পনায় ‘বাস রুট রেশনালাইজেশন’ বা ‘বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজ’ চালুর পরামর্শ আসে। এতে রাস্তা থেকে পুরনো বাস উঠে যাবে আর সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে মালিকরা রাস্তায় নতুন বাস নামাতে পারবে। অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ নিজ বিনিয়োগের আনুপাতিক হারে লভ্যাংশ পাবেন।