গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাব এবং বাহিনীটির প্রাক্তন-বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে তলব করে ব্যাখ্যা চেয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শনিবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
এতে দুই দেশের সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর।’
তলবের পর ব্যাখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কী বলেছেন সে বিষয়ে কিছু বলেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরে সংবাদমাধ্যমকে জানাবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্ত ইম্যাচিউরড বা অপরিপক্ব বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
মোমেন বলেন, ‘প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের হাজার খানেক মানুষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মারা যান। কয়েক হাজার মানুষ নিঁখোজ হন। বাংলাদেশেও যে ৬০০ মানুষের কথা বলা হচ্ছে, তার কোনো তালিকা দেশটি দেয়নি। এমন কোনো তালিকা বাংলাদেশ সরকারের কাছেও নেই।’
কোনো বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগের পর সে বাহিনীর প্রধানের যুক্তরাষ্ট্র সফরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা, দেশটির নতুন ঢং ছাড়া কিছু নয় বলেও মন্তব্য করেন মোমেন।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের সাত বর্তমান ও সাবেক কমর্কতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানায়। দেশটির পররাষ্ট্র বিভাগ ও রাজস্ব বিভাগ আলাদা আলাদা করে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়।
নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও পুলিশের বর্তমান মহাপরিদর্শক তথা আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মুস্তফা সরওয়ার, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও আনোয়ার লতিফ খান এবং বাহিনীটির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ।
বিষয়টি নিয়ে সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বস্তুনিষ্ঠভাবে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। তারা অতিরঞ্জিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।’
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের এ নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি অভিযোগ ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে তদন্ত হয়। কোনো সংস্থা মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়।’