বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘অল্প বয়সে প্রতিমন্ত্রী হয়ে মুরাদের মাথা ঠিক ছিল না’

  •    
  • ৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৬:২৮

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ বাকী বিল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জামালপুরে কোনো ধরনের উন্নয়ন মুরাদ করতে পারেনি। উন্নয়ন করার ক্ষমতাও তার ছিল না। মুরাদ সরিষাবাড়ী থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, কিন্তু তার উপজেলাতেও উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন নেই।’

সদ্য পদত্যাগ করা তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান জামালপুর এলে তার বিভিন্ন সভা মুখরিত থাকত শ শ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের স্লোগানে। তবে সাম্প্রতিক বিতর্কের জেরে পদত্যাগ করার পর থেকে তার পক্ষে কোনো নেতাকর্মীকে সরব হতে দেখা যায়নি।

জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা মনে করেন, মুরাদ ক্ষমতায় থাকাকালে নিজ নির্বাচনি এলাকা সরিষাবাড়ীতেই উন্নয়নমূলক কোনো কাজ করেননি। এসব কারণে নেতাকর্মীরা তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ বাকী বিল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মুরাদ আমাদের ছেলের সমান। অল্প বয়সে প্রতিমন্ত্রী হয়ে মাথা ঠিক ছিল না। এজন্য যখন যা ইচ্ছা করেছে তাই বলেছে। এর উচিত শিক্ষাও পেয়েছেন তিনি।

‘জামালপুরে কোনো ধরনের উন্নয়ন মুরাদ করতে পারেনি। উন্নয়ন করার ক্ষমতাও তার ছিল না। মুরাদ সরিষাবাড়ী থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, কিন্তু তার উপজেলাতেও উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন নেই।’

স্থানীয় নেতাকর্মীরা মুরাদের পদ হারানোর বিষয়টি কীভাবে দেখছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিতর্কিত মুরাদ ইতোমধ্যে রাজনৈতিকভাবে শাস্তি পেয়েছে। তার ব্যবহার সব জায়গায় পরিস্কার হওয়ায় নেতাকর্মীরা মুরাদের বিপক্ষে। আমারও তাকে জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছি।’

সরিষাবাড়ী উপজেলা যুবলীগের সদস্য রানা সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী (মুরাদ) কোনো সমাবেশে যোগ দিলে পাশে থাকত অসংখ্য নেতাকর্মী। মাঝেমধ্যে ভুল বক্তব্য দিলেও পাশে থাকা নেতাকর্মীরা হাততালি দিয়ে উৎসাহ দিতেন। প্রতিমন্ত্রী মনোক্ষুণ্ণ হবে এমন আশংকায় কেউ কোনোদিন তার ভুল মন্তব্য বা বক্তব্যের জন্য বাধা দেয়নি।

‘হাইব্রিড নব্য অসংখ্য কর্মী তিনি প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে আশপাশে ঘুরঘুর করেছে। প্রতিমন্ত্রীও তাদেরকে কাছে টেনে নিয়েছেন। ফলে এসব কর্মীরা বাগিয়ে নিয়েছেন নানা সুযোগ-সুবিধা, কিন্তু ত্যাগী নেতাকর্মীরা কোনো ধরনের সুবিধা পায়নি।’

যুবলীগের এই নেতা মনে করেন, প্রতিমন্ত্রীর খারাপ সময় চলে এসেছে এমন আশংকায় শুরুতেই সুবিধাভোগী নেতাকর্মীরা সটকে পড়েছেন। আগে তার বাড়িতে নেতাকর্মীদের আনাগোনা থাকলেও এখন কাউকে খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, ‘মুরাদের নিজের ভুলের জন্য আজকে তার এমন অবস্থা। ক্ষমতায় থাকলে মাথা ঠান্ডা রেখে বুঝেশুনে কথাবার্তা বলতে হয়। উদ্ভট ও মনগড়া মন্তব্য করে মাঝেমধ্যেই বিতর্কিত হয়েছেন তিনি। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার বিরুদ্ধে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। ফলে এমন নেতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে নেতাকর্মীরা।’

সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসনের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মুরাদ হাসানের বক্তব্য সম্বলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে ‘অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।

তার ওই বক্তব্যের সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছিলেন নারী অধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সে সময় প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবিও উঠেছিল।

এর মধ্যে এক চিত্রনায়িকার সঙ্গে তার ফোনালাপ ভাইরাল হয়। সেই নারীকে তিনি তার কাছে যেতে বলেন। না গেলে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে উঠিয়ে নেয়ার হুমকি দেন। তার কাছে গেলে ধর্ষণ করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন।

এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর ও অবমাননাকর বক্তব্য রাখেন আরেকটি অনলাইন আলোচনায়।

মুরাদকে বহিষ্কারে বিএনপি, নাগরিক সমাজ, নারী অধিকার কর্মী ও ছাত্রলীগের নারী কর্মীদের দাবির মধ্যে গত সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সিদ্ধান্ত জানান। মুরাদকে মঙ্গলবারের মধ্যে পদত্যাগের নির্দেশ দিলে তিনি পদত্যাগ করেন।

এরপর মঙ্গলবার জেলা আওয়ামী লীগে সভাপতি বাকী বিল্লাহ জানান, মুরাদকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন মুরাদ হাসানকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে।

এ বিভাগের আরো খবর