বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চবিতে খাবারের দাম বেড়েছে, মান বাড়েনি

  •    
  • ২৫ নভেম্বর, ২০২১ ১০:৪১

সোহরাওয়ার্দী হলের শিক্ষার্থী মাহমুদুল ইসলাম মারুফ বলেন, ‘খাবার আগের মতোই আছে। দাম বেড়েছে। দাম বাড়ানোর পর প্রথম কয়েকদিন খাবার ভালো দিয়েছিল। এখন আবার সব আগের মতো। একটা মুরগি দিয়ে ২০ জনকে খাওয়ানো হয়। বাধ্য হয়ে খেতে হয় এই খাবার। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তুকি না দিলে মান হয়তো বাড়বে না।’

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ডাইনিংয়ের খাবারের দাম ২৫ শতাংশ বাড়ানো হলেও বাড়েনি খাবারের মান। এতে অসন্তুষ্টি দেখা দিয়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। তারা বলছেন, দাম বাড়ার পর থেকে ২০ টাকার খাবার খেতে হয় ২৫ টাকা দিয়ে, কিন্তু স্বাদে হেরফের নেই।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি আবাসিক হলের শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। শিক্ষার্থীদের দুপুরের ও রাতের খাবারের জন্য নির্ভর করতে হয় ডাইনিংয়ের ওপর। উপায় না থাকায় বিস্বাদ খাবারই খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, দ্রব্যম্যূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সবার সিদ্ধান্তক্রমে খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে এই দামেও খাবারের মান বাড়ানো সম্ভব নয়। একই কথা হলের ডাইনিং পরিচালনাকারীদেরও।

খাবার রান্না করে রাখা

ডাইনিং থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভাত ৮ টাকা, মুরগি বা মাছ ৮ টাকা এবং সবজি ৪ টাকা করে ধরা হতো, যা এখন বাড়িয়ে ভাত ১০ টাকা, মুরগি বা মাছ ১০ টাকা এবং সবজি ৫ টাকা করা হয়েছে। ডালের জন্য কোনো টাকা নেয়া হয় না। মাঝে মাঝে ক্যান্টিনে আগের দিনের বেঁচে যাওয়া খাবারও খাওয়ানো হয় বলে অভিযোগ অনেক শিক্ষার্থীর।

হলের ডাল

হলগুলোর ডাইনিং ও ক্যান্টিনে দেখা যায়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না হচ্ছে খাবার। বাধ্য হয়ে অনেক শিক্ষার্থীকে বেশি টাকা দিয়ে বাইরের হোটেলগুলোতে খেতে হয়।এত অল্প টাকায় মান রক্ষা করা সম্ভব নয় জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলের ডাইনিংয়ের ম্যানেজার নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খাবারের জন্য শিক্ষার্থী প্রতি প্রায় ২৬ টাকার মতো খরচ হয়। বিশ্ববিদ্যালয় এখানে এক টাকাও ভর্তুকি দেয় না, তারা শুধু স্টাফদের বেতন দেন। আমরা ৩০ টাকা করতে বলেছিলাম, প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ২৫ করা হয়েছে।’তিনি বলেন, ‘খাবারের মান বাড়বে না। এই টাকা দিয়ে কীভাবে বাড়বে। টাকা বাড়ানো হয়েছে বাড়তি খরচ পোষানোর জন্য। পাঁচজনের চাল কিনলে দাম পড়ে ৫৬ টাকা, আমরা পাই ৫০ টাকা। তাও ৬ টাকা ঘাটতি থেকে যায়। মাছ-মুরগির দাম বাড়ছে, আলু-মসলা আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি ডাইনিংয়ের দিকে নজর দেয়, কিছু টাকা ভর্তুকি দেয় তাহলে খাবারের মান বাড়ানো যেতে পারে।’প্রীতিলতা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সুজানা মালিহা বলেন, ‘ডাইনিংয়ের খাবারের মানটা একটু বাড়িয়ে যদি দাম বাড়ত তাইলে এক কথা, অথচ ওই একই খাবার, তার মধ্যে দাম বাড়ানো হইল ডাইনিংয়ে।’

আলাওল হলে ধোয়া হচ্ছে বাসন

সোহরাওয়ার্দী হলের শিক্ষার্থী মাহমুদুল ইসলাম মারুফ বলেন, ‘খাবার আগের মতোই আছে। দাম বেড়েছে। দাম বাড়ানোর পর প্রথম কয়েকদিন খাবার ভালো দিয়েছিল। এখন আবার সব আগের মতো। একটা মুরগি দিয়ে ২০ জনকে খাওয়ানো হয়। বাধ্য হয়ে খেতে হয় এই খাবার। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তুকি না দিলে মান হয়তো বাড়বে না।’আশফাক প্রত্যয় নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হলের ডাইনিংয়ের খাবার মোটেও রুচিসম্মত নয়। হলের ডালকে হলুদ গোলা পানি বললেও ভুল হবে না। মানুষ অনেক সময় ভুলে ডালের পাত্রে হাত ধুয়ে ফেলে। তরকারিতে মাছের সাইজ একটা আঙুলের সাইজ থেকে ছোট।’শাহজালাল হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ অহিদুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, হলের ডাইনিংয়ে খাবারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কোনো ভর্তুকি দেয় না। ২০ টাকা দিয়ে খাবার মেনটেইন করা অনেক কষ্ট, তাই খাবারের দাম বাড়িয়ে ২৫ করা হয়েছে।

মাছের টুকরা

খাবারের মানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘৫ টাকার জন্য একটু করে মান বাড়ানো হয়েছে। আগে শুধু পাঙ্গাস মাছ দিতো, আমি আমার হলে বলছি রুই মাছ দিতে। এমনিতে ছেলেদের কোনো অভিযোগ নাই।’মান বাড়ানোর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে’র কাছে জানতে চাইলে তিনি শিক্ষার্থীদের টাকা বাড়িয়ে দিতে বলেন।তিনি বলেন, ২০ টাকার জিনিসের দাম বেড়ে হয়েছে ৩৫ টাকা। সেখানে ৫ টাকা বাড়িয়ে ২৫ টাকা দিয়ে মান উন্নয়ন কীভাবে হবে?ভর্তুকির আর সুযোগ নেই জানিয়ে উপ-উপাচার্য বলেন, ভর্তুকি দিয়েই ২৫ টাকা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্টাফ, গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল বহন করছে, ওগুলোই ভর্তুকি। চাকসুর খাবারেও ভর্তুকি দেয়া হয়।শিক্ষার্থীরা চাইলে ডাইনিংয়ের দায়িত্ব তাদের হাতে দেয়া হবে বলেও জানান চবি উপ-উপাচার্য।

এ বিভাগের আরো খবর