নিজ সংসদীয় এলাকায় সহিংসতা এড়াতে আখাউড়ায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এমন অবস্থায় আখাউড়ার দক্ষিণ ইউনিয়নের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ কর্মী জালাল উদ্দিন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নেই বলে জালালকে সমর্থন দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে উপজেলা যুবলীগ।
জালাল উদ্দিন নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান হন। দক্ষিণ ইউনিয়নে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডাকা সভায় তিনি এবার স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার কথা জানান। মাঠে তাকে সমর্থন দিতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আতাউর রহমান নাজিম ও আব্দুল মমিন।
আব্দুল মমিন বলেন, ‘জালাল উদ্দিন আগে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন। তিনি যুবলীগের একজন কর্মী। তাছাড়া আখাউড়া ইউনিয়ন নির্বাচনে যুবলীগের যেসব কর্মীরা অংশ নিচ্ছেন, উপজেলা যুবলীগ তাদেরকে সমর্থন করবে। তাই সবাইকে অনুরোধ করবো জালাল উদ্দিনকে ভোট দিয়ে আবারও দক্ষিণ ইউনিয়নের জনগণের সেবা করার সুযোগ দেবেন।’
এ বিষয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান নাজিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যুবলীগের কর্মীসভায় উপজেলা যুবলীগ থেকে জালাল উদ্দিনকে সমর্থন করেছি এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানিয়েছি তাকে সমর্থন দেয়ার জন্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী না দিলে যুবলীগের প্রার্থী থাকলে তাকে সমর্থন দেয়াই যায়।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভা মিলনায়তনে গত ২০ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে বিভিন্ন জায়গায় ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা দেখা দিয়েছে। তাই সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমার সংসদীয় আসন আখাউড়া-কসবায় নৌকা প্রতীক ইউপি নির্বাচনে না দেয়ার অনুরোধ জানাই। তিনি এ প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘নৌকা প্রতীক না থাকায় আমি মনে করি না নির্বাচন নিয়ে জনগণের ইচ্ছা নষ্ট হয়ে যাবে। জনগণ চায় স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনকে উৎসবমুখর করে অংশগ্রহণ করতে। সে কারণে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন নিয়েছি, স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো ওপেন (উন্মুক্ত) করে দেয়া হবে।’
স্থানীয় নেতা-কর্মীদের তিনি বলেন, ‘উন্মুক্ত নির্বাচন করা মানে কিন্তু এটা না, দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করে যেমন-তেমনভাবে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে পড়বেন। সবাইকে বিবেচনা করে আওয়ামী লীগের পরিবারের একজনকে নির্বাচিত করতে হবে। যদি কেউ ষড়যন্ত্র করেন এ ব্যাপারে তাহলে কিন্তু কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আপনারা যে কেউ দাঁড়াতে পারেন আপত্তি নেই, কিন্তু ব্যক্তির চেয়ে দল বড়।’
আইনমন্ত্রী যেখানে সহিংসতা এড়াতে নৌকা প্রতীক না দেয়ার কথা বলেছেন, সেখানে যুবলীগ কোনো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে পারে কি না তা জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন বাবুল বলেন, ‘আইনমন্ত্রীর নির্দেশ ব্যতিত আওয়ামী লীগ এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। যুবলীগ যদি কাউকে সমর্থন দিয়ে থাকে সেই বিষয়ে আওয়ামী লীগ অবগত নয়। আইনমন্ত্রী উপজেলা আওয়ামী লীগকে যেভাবে নির্দেশ দিবে আমরা সেভাবেই কাজ করব।’
চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে আখাউড়া উপজেলার আখাউড়া উত্তর, আখাউড়া দক্ষিণ, ধরখার, মনিয়ন্দ ও মোগড়া ইউনিয়নে ভোট হবে। এর জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন আগামী ২৫ নভেম্বর।